2 December 2014

ভোগবাদীদের অনুষ্ঠানে মঞ্চে শিল্পীর মৃত্যু হলেও নাচাগানা থেমে থাকে না

​​ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান সাহেব দার্শনিক লোক হিসেবে পরিচিত, সুশীলও বটে। চোখের সামনে সহবক্তা কাইয়ুম চৌধুরী মরে গেলেও তিনি অনুষ্ঠান থামাতে আগ্রহী ছিলেন না, দার্শনিকতা কপচে বলে উঠলেন, "অনুষ্ঠান চলবে, জীবন যেমন বয়ে চলে"। [সূত্র: কালের কন্ঠ, ১/১২/১৪] তার একটু আগেই কাইয়ুম চৌধুরী স্টেজে উঠে বলেছিলেন, "আমার একটি কথা বলার রয়েছে।" কিন্তু মৃত্যুর ফেরেশতা তাকে সে সুযোগ দেননি। মৃত্যুর নির্দেশ আল্লাহ এভাবেই দেন। ঠিক যে সময়ে, যে মূহুর্তে ঠিক করা রয়েছে তার একচুল এদিক ওদিক হয়না। শিল্পী কাইয়ুম এখন আখিরতের পথে হাঁটা দিতে বাধ্য হয়েছেন। যা কথা বলার তার অতীত নিয়েই বলতে হবে এখন আল্লাহর কাছে।

29 October 2014

'ট্রু লাভের' ছড়াছড়ি আর কিছু মুসলিম ছেলেমেয়ের কথা

যেসব ভাইবোনেরা চারপাশের উত্তাল বন্যার স্রোতের মতন 'ট্রু লাভ' দেখে, সস্তার চাইতে সস্তা ভালোবাসা আর কামের প্রচারণা দেখেও নিজেদের সংযত রাখতে রাখতে ক্লান্ত হয়ে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন, তাদের জন্য বলছি -- হে আমার ভাই/বোন, আপনি তো আল্লাহর জন্যই নিজেকে সংযত রাখছেন তাইনা? আপনি তো জানেন, আমাদের যেকোন সময় যে মৃত্যু আলিঙ্গন করতে পারে, এবং তার পরেই আল্লাহর কাছে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসের খবর রাখেন, তিনি আমাদের জীবনের কষ্টগুলোর, পরীক্ষাগুলোর বিপরীতে তার জন্য আঁকড়ে ধরে থাকা ভালোবাসাকে পছন্দ করেন।

আপনি যদি আপনার অনাগত মানুষটির জন্য পবিত্র থাকতে চেষ্টা করতে থাকেন, যত কষ্টই হোক, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। আল্লাহর পুরষ্কার তো আমাদের কল্পনারও অতীত, তাইনা? আপনি যদি জীবনসঙ্গীর সাথে মিলিত হবার আগেই দুনিয়া থেকে চলে যান, জান্নাতে আল্লাহ আপনাকে উত্তম ও পবিত্র সঙ্গী দান করবেন। আল্লাহর জন্য কষ্ট করা আপনার প্রতিটি মূহুর্ত, প্রতিটি ক্ষণ আপনার জন্য অকল্পনীয় পুরষ্কারের ব্যবস্থা করে দিবে। আল্লাহ প্রিয় বান্দাদেরকে কিন্তু একটু বেশি করে পরীক্ষা করেন, তাদের হাতগুলো যখন দু'আর জন্য উঠে থাকে আর চোখের পানি ঝরতে থাকে -- সেই মূহুর্ত আর অন্তরকে আল্লাহ পছন্দ করেন।

প্রচুর দু'আ করুন। আল্লাহর কাছে দু'আ করুন তিনি যেন আপনার জন্য যাকে নির্ধারিত রেখেছেন সে-ও যেন পবিত্র থাকে। সমাজের, সংস্কৃতির নখরের জঘন্যতা যেন তাকে স্পর্শ না করতে পারে। আল্লাহর ভান্ডার অফুরন্ত, আল্লাহ নিশ্চয়ই সমস্ত দু'আ শোনেন। প্রতি ওয়াক্ত নামাজে আপনি আপনার অনাগত মানুষটির জন্য দু'আ করতে থাকুন। কে জানে, হয়ত যিনি আপনার জন্য নির্ধারিত আছেন, তিনি আপনার দু'আর বদৌলতেই বদলে যাবেন, আরো উন্নত হবেন, ছুটবেন জান্নাতের পথে, ইসলামকে আঁকড়ে ধরবেন আপনার চাইতে বেশি করে।

দু'আ হচ্ছে বান্দার এমন এক মাধ্যম যা ভাগ্য বদলে দেয়, যা আমাদেরকে আল্লাহর খুব কাছে নিয়ে যায়। ভাই ও বোন আমার, দু'আ করুন, প্রচুর দু'আ করুন। ইনশা আল্লাহ খুব শীঘ্রই আল্লাহ আমাদেরকে পুরষ্কৃত করবেন। আল্লাহ অভাবহীন, দয়াময়, প্রেমময় ও অসীম দয়ালু।

~ একজন মুসলিম ভাই

17 October 2014

পর্নোগ্রাফি ও সংসার

​​একটা খুব প্রয়োজনীয় কথা, একটা সিরিয়াস সতর্কবাণী। অবিবাহিত মুসলিম ভাই-বোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অনেকের ধারণা -- "বিয়ের আগের কিছু খারাপ স্বভাব আছে, বিয়ে হলে হয়ত কেটে যাবে, ব্যাপার না।" -- ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভুল।

পাশ্চাত্যের দেখাদেখি পর্ণোগ্রাফি আমাদের সমাজেও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ফেসবুকেও অজস্র পর্ণগ্রাফিক ফটোর ছড়াছড়ি। ছেলে এবং মেয়ে কেউ বাদ যায় না এসব ছবি দেখার হাত থেকে। অনেক ছেলেরাই পর্ণগ্রাফি মুভি এবং গল্পসমূহের নেশার শিকার। মনে রাখবেন, পর্ণগ্রাফি কোন অভ্যাস নয় শুধু, এটা একটা নেশা -- নিউরোসায়েন্টিস্টরা বিষয়টাকে ভয়াবহ নেশা হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছেন। একসময় অভ্যাস হয়ে তা মনের ভিতরে প্রোথিত হয়ে যায়।  অজস্র সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে কেননা বিয়ের পরে স্ত্রী আবিষ্কার করেন তার স্বামী তাকে আসলে পর্নোগ্রাফি নায়িকার মতন করে চাচ্ছে। ক্রমাগত পর্ন মুভি দেখতে দেখতে অনেকেই মানসিকভাবে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বিয়ের পরেও ছাড়তে পারে না।

15 October 2014

ফেসবুক কোন ম্যাচমেকিং মিডিয়া নয়

​​​​বিয়ে করতে উতলা হয়ে বিছানা কাটাকাটিতে বসে যাওয়া, আম্মাকে ফোন করে শীতের দিনে সবার বিয়ে হওয়ার আলাপ করতে বসে যাওয়ার গল্পগুলা কেবল রম্যতেই মানায়। বাস্তবে এসব কাপুরূষতা। বিয়ে করতে সাহস লাগে। পুরুষ হিসেবে আপনার বিয়ে করার আগ্রহটা কোন ফান না। রাতের বেলা একলা লাগে, শীতের দিনে একলা লাগে বলে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার।

9 September 2014

বাবা-মায়ের সাথে সন্তানেরা মনের কথা শেয়ার করতে পারে না

একটা অদ্ভুত প্রথা চলছে এ সমাজে। ঘরের মানুষদের কাছে ভালো ব্যবহার পাওয়া দুষ্কর হয়, রাগারাগি, ঝগড়াঝাটি, কথা কাটাকাটি চলে নিয়মিত। বাবা-মায়ের সাথে সন্তানেরা মনের কথা শেয়ার করতে পারে না সম্পর্কের জটিলতার কারণে, অথচ সেই সন্তানটিই বাইরে কোন বন্ধু বা বড় ভাইয়ের হাতে তার জীবনের স্পর্শকাতর 'শেয়ারিং' করে ভবিষ্যতকে জটিলতর করে ফেলে। মা-কে মেয়ের আন্তরিক গলায় কথা বলা হয় না কিন্তু বান্ধবীর সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা মিষ্টি কথোপকথন হয়। ঘরে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্য হয়, সেটা তারা সমাধানও করে না। কিন্তু তারা যখন কর্মস্থলে যায় তাদের পুরুষ-মহিলা কলিগদের সাথে মিষ্টি কথায়, মিষ্টি ভাষায় আলাপচারিতা শুনে ঘরকে অপছন্দ হতে থাকে। কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি যদি মিষ্টি ভাষা ও সুন্দর ভাষা হয়, ঘরের মাঝে আদববিহীন আচরণ, নোংরা ভাষা ও অহংবোধের এইসব প্রদর্শনী আমাদের পরিবারগুলোকেই ধ্বংস করছে। কোন স্ত্রী স্বামীর প্রতি কঠোর ও তিক্ত ভাষা ব্যবহার করতে থাকে কোন চিন্তা মাথায় নিয়ে সেটা খুবই অবাক করা বিষয়। আমাদের সমাজের সংসারগুলোর এই ক্ষয় ও দুর্গতি নিয়ে সবারই চিন্তা করা উচিত। নিজেদের প্র্যাকটিসিং বলে বলে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলা মানুষদের পরিবারেও অজস্র সমস্যা এখন। অথচ আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি প্রিয় যার আচরণ সুন্দর, শুধু চরিত্রই যথেষ্ট নয়। অন্যদের সাথে কেমন করে ব্যবহার করা হয় সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

27 August 2014

ছেলেরা সম্মান পেতে চায়, মেয়েরা চায় ভালোবাসা

শাইখ ওয়ালিউল্লাহ একটা আলোচনাতে বলেন, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের খারাপ ট্রেডিশানগুলোই মূলত অনুকরণ করেছি, ভালোগুলো খুব কমই করি। এখনকার সমাজে তাই খারাপের প্রচলন অনেক বেশি হয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ বলছিলেন, একসময় দাদী-নানীরা সম্মান করে তাদের হাজব্যান্ডদের নাম ধরে ডাকতেন না কখনো। যদিও এই ধরণের কোন বিষয় ইসলাম আদেশ করে না তবু এরকম সম্মানের ব্যাপারগুলো এখন সমাজ থেকে প্রায় উঠেই গেছে। এখনকার অনেক অনার্স/মাস্টার্স পাশ স্ত্রী তাদের স্বামীদের গায়ে হাত তোলেন এমন ঘটনাও সমাজে বেশ ছড়িয়ে গেছে। চল্লিশা, তিরিশা টাইপের কিছু শোক পালনের মতন বানোয়াট এবং ভুল ট্রেডিশান এখনো সমাজের আনাচে কানাচে চলছেই... কিন্তু আমাদের দাদাদের মুখের উপরে কথা বলা দূরে থাক, তাদের চেয়ারে পর্যন্ত বসার কাজটি করতেন না আমাদের আব্বা-চাচারা। যদিও ইসলাম এমনটি করতে বলে না, তবু আমরা তো সম্মান করার বিষয়গুলো না নিয়ে কেবল ভুল ও নিষিদ্ধ কাজগুলোকেই জারী রাখছি পরবর্তী সময়ে... 

সম্মান করা ভালোবাসা পাওয়ার একটি মাধ্যম। বেশিরভাগ মানুষই বলেন, ছেলেরা সম্মান পেতে চায়, মেয়েরা চায় ভালোবাসা। সংসারের ছোট-বড় কাজে স্বামীদের সম্মান না দিয়ে বরং লাঞ্ছিত-অপমানিত করার মাঝে নারীর ভালোবাসা অর্জনের কোন সম্ভাবনা নেই, তেমনি স্ত্রীকে ভালোবাসা না দিলেও সম্মান পাওয়া যায় না। এই বুঝগুলো আমাদের সমাজ থেকে যেন হারিয়েই যাচ্ছে। ভালোবাসা এবং সম্মান কোন দাবী-দাওয়ার মতন বিষয় নয়, কিন্তু এটা কাজ দিয়ে অর্জন করে নিতে হয়।

প্রিয়জনদেরকে তাদের প্রাপ্য সম্মান ও ভালোবাসা বুঝিয়ে দিন এবং নিজেকে প্রস্তুত করুন আগামীর সুন্দর জীবনের জন্য।

24 August 2014

পর্নোগ্রাফি নেশায় আক্রান্তদের মুক্তির জন্য কিছু সহজ টিপস

সমাজের অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনাকাংখিত সেক্সুয়াল রিলেশনশিপ বা যিনার সাথে জড়িয়ে পড়েন। আল্লাহর রাহমাতে তারা হয়ত ভুল বুঝতে পারেন। কিন্তু পুরোনো খারাপ কাজ আর পিছু ছাড়ে না, স্মৃতিতে আসতে থাকে, আবারো সেই পাপে পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ভুল মানুষ করতেই পারে, সেটাই মানবিক। কিন্তু ভুলের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা শয়তানের কাজ। তাই ভুল স্বীকার করে জীবনকে সুন্দর করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।

নুমান আলী খান একটি ভিডিওতে পাওয়া কিছু টিপসের সাথে আরো কিছু জিনিস যোগ করে দিলাম। আশা করি উপকার হবে। আল্লাহ মুসলিম সমাজের সবাইকে হেফাজত করুন।

-- ​ ​সবার আগে সেই খারাপ কাজ ছেড়ে সরে আসতে হবে।

-- ​ ​আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হতে হবে [তাওবা​ ও ইস্তিগফার​ করা]

-- ​ ​ক্রমাগত ভালো কাজ করতে হবে, কেননা ভালো কাজ মন্দ কাজকে ঢেকে দেয়।​​

-- ​ ​সঙ্গীসাথী বদলে ফেলতে হবে।​ আগেকার সম্পূর্ণ ফ্রেন্ড সার্কেলকে এভয়েড করতে হবে।​

-- ​ ​একাকীত্ব থেকে দূরে থাকতে হবে, প্রয়োজনে ভালো সঙ্গীর কারণে গিয়ে ভালো বিষয়ে আলোচনা করতে দূরে কোথাও যাওয়াও উচিত হবে।

-- ​ ​কমিউনিকেশন ডিভাইস থেকে দুরত্ব রাখতে হবে, বিশেষ করে একাকীত্বের সময়ে যেন আবার কোন নতুন সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার স​​ম্ভাবনা না থাকে।

-- আল্লাহর স্মরণ করতে হবে সবসময়।​

-- নামাজে নিয়মিত হতে হবে, ইসলামি জ্ঞানার্জনে নিজেকে লাগিয়ে দিতে হবে।

-- নিজেকে স্মরণ করাতে হবে, দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। আখিরাতে আল্লাহ এই জীবনের সবকিছুর হিসেব নিবেন। ​

-- বিবাহপূর্ব বা বিবাহবহির্ভূত সকল সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন।

-- মোবাইল ফোন, ফেসবুক, মেসেঞ্জারেও যেকোন কমিউনিকেশন থেকে দূরে থাকুন। নইলে শয়তানের ওয়াসওয়াসায় জীবন আবার জটিল হয়ে যাবে।

অনুপ্রেরণা -

১) নুমান আলি খান - সেক্সুয়াল ডিজায়ারস http://www.youtube.com/watch?v=rJY7SoREkOk

২) টাইম টু কিক পর্ন আউট অফ দি সিস্টেম http://muslimmatters.org/2011/08/15/ramadan-time-to-kick-porn-addiction-out-of-your-system/

//২৪ আগস্ট, ২০১৩

27 May 2014

বিয়ে মানে কি কুরবানি? বিবাহিত মানে কি মৃত?

​​
​​বিয়ে মানে কুরবানি, বিবাহিত মানে মৃত --> এরকম কিছু কথা সমাজে প্রচলিত। নতুন প্রজন্মের মাঝে খুব বেশি ফান বা মজা-মশকরা হিসেবে এইসব ব্যবহৃত হয়। আপনি কি ভেবে দেখেছেন আপনি যেই ফান করেন তা কি সঠিক নাকি বেঠিক? আপনার জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হচ্ছে কিনা তা যখন চিন্তা করবেন, এটাই আপনার ঈমানের পরিচয়।

বিবাহিত মানে কি আসলেই মৃত? অথচ আল্লাহ বলেছেন তিনি আমাদের জন্য আমাদের জীবনসঙ্গীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা প্রশান্তি, উচ্ছ্বাস আর দয়া অনুভব করি। আমাদের প্রিয় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেছেন বিয়ে হলো দ্বীনের অর্ধেক। আল্লাহ বলেছেন আমাদেরকে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য নির্লজ্জতার আশেপাশেও না যেতে। আমাদের প্রতি আদেশ রয়েছে আমাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে। এমতাবস্থায় আপনার শারীরিক আর মানসিক প্রয়োজনগুলো যদি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য না করে আপনি সামলাতে পারেন, তাহলে বিয়ে না-ই করলেন। সেক্ষেত্রই হয়ত বিয়েকে 'মৃত্যু' হিসেবে ফান করে প্রাণ শীতল করতে পারেন। তবে এরকম হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিয়ে তো কেবল তারাই এড়িয়ে যেতে চায় যারা অক্ষম অথবা চরিত্রহীন। তারাই বিয়ে নিয়ে বাজে কথা তারাই বলে যারা নিজেরা মূর্খ, হতাশ। যারা আল্লাহর উপরে ভরসা করে তার কাছে দোয়া করতে চায় না, পারেনা।

সাবধান!! আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশ যে পবিত্র বন্ধনকে ঘিরে রয়েছে, তা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরাকে "নির্দোষ ফান" হিসেবে ধরে নেয়ার ধৃষ্টতা দেখাবেন না। আপনার "নির্দোষ ফান" কিন্তু আরো অনেকের মনে ডিরেক্টলি বা ইনডিরেক্টলি প্রভাব বিস্তার করে, হতাশ করে। বিয়ে বা পরিবারের মতন অতি-গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আপনার "ফানি" মন্তব্যগুলো নোংরা উপহাস হয়ে যায় কিনা সেটা খেয়াল করুন।

বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। বিয়ের ফলে একজন মানুষ দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ করতে পারে, বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে সে আল্লাহকে ভয় করে। বিয়ে শেখায় দায়িত্ববোধ। বিয়ের ফলে চরিত্র রক্ষার ঢাল আপনি পেতে পারেন। আপনার ব্যক্তিগত চরিত্র ও স্বভাবগুলোতে খুব কাছ থেকে আরেকটা মানুষ বেশ খেয়াল রাখতে পারেন তাই বিয়ে আপনার জন্য একটা রিফ্রেশার ও রিমাইন্ডারও বটে। বিয়ে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠান। বিয়ে নিয়ে তাই নোংরা বাজে ফান করার অপসংস্কৃতিকে না বলুন। আল্লাহকে ভালোবেসে তার ভালোবাসাকে আপন করে নিন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দিন।

1 May 2014

নববিবাহিতদেরকে অভ্যর্থনা জানানো

​​নববিবাহিতদেরকে অভ্যর্থনা জানানো একটা সংস্কৃতি, একটা সৌন্দর্যময় বিষয়। কিন্তু এখনকার খ্যাত সংস্কৃতিতে এইটা হয়ে গেছে এমন -- কংগ্র্যাচুলেশন, কংগ্র্যাটস, নাইস, খুল। আল্লাহ মাফ করুন। অথচ আমাদের সুন্নাহ পদ্ধতিতে নববিবাহিতদের জন্য আশীর্বাদ/অভ্যর্থনা/উইশ হিসেবে যেটা করা হয় সেটা হলো সুন্দর একটা দোয়া --

- "বারাকাল্লাহু লাকা ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া জামা'আ বাইনাকুমা ফি খাইর।"
- "আল্লাহ আপনার জন্য বরকত দান করুন, আপনার উপর বরকত নাযিল করুন এবং কল্যাণের সাথে আপনাদের উভয়কে একত্রিত করুন।"

[তিরমিযি/১০৯১, ইবনে মাযাহ ১৯০৫। দোয়াটি পাবেন, হিসনুল মুসলিম: দোয়া নং-৭৮]

এখন থেকে আমরা নববিবাহিতদেরকে এই সুন্নাহ পদ্ধতিতে কল্যাণ কামনা/উইশ/আশীর্বাদ করবো ইনশা আল্লাহ!

আপনি যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন

​​​​আপনি যতবার অন্যায়ভাবে ​​​​আপনি প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন, হোক সে ট্যারা চোখে গাইর-মাহরাম নারীর দিকে তাকানো অথবা টেলিভিশনের পর্দায় তাকিয়ে থেকে স্বল্পবসনা চরিত্রহীন নারীদের দেহের বিভঙ্গ দেখা, অথবা চুরি করে কিছু খাওয়া, কিছু অন্যায়ভাবে মেরে দেয়া, বাসে উঠে টাকা না দিয়ে বাস থেকে নেমে পড়া, আপনি আপনার শারীরিক চাহিদাকে হারাম উপায়ে পূরণ করবেন, কিংবা যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির চাওয়া পূরণ করবেন -- আপনি আপনাকেই ধ্বংস করছেন।

প্রতিটি কামনা ও বাসনার প্রতি সাড়া আপনাকে নামিয়ে দিবে নিচে। যেভাবে নক্ষত্র খসে পড়ে আকাশ থেকে, আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মনুষ্যত্বের পতন। আপনার নামাজে মনোযোগ কমে যাবে, আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারবেন না, হৃদয় পাপে শক্ত হয়ে যেতে থাকবে আপনি নিজের ভবিষ্যতকে এভাবেই ধ্বংস করতে থাকবেন।

বাঁচতে হলে অনুতপ্ত হয়ে আর কখনো করবেন না এমন নিয়াত করে তাওবা করতে হবে। যদি ফিরে পেতে চান হৃদয়ের শান্তি, যদি অনুভব করতে চান প্রিয়জনদের ভালোবাসা -- আপনাকে নিজের পশুত্বকে কুরবানি করে ফিরে আসতে হবে। মনে রাখবেন, পাপাসক্ত অন্তর কখনো পবিত্র ভালোবাসার সৌন্দর্যকে অনুভব করতে পারে না।

সাবধান হোন। দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ চাইলে হারাম থেকে দূরে থাকুন। নিশ্চয়ই শয়তান চাইবে আপনাকে প্রতিনিয়ত পথভ্রষ্ট করতে। আল্লাহ আমাদেরকে অন্যায়, অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দিন।

9 April 2014

চরিত্র নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করতে ভালোবাসার একটি টিপস

​​
​ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের চরিত্র নষ্ট করে দিয়েছে মোবাইল ফোন। কে যে কার সাথে আলাপ করে তার হদিস নিজেরাই জানে না। ক্লাসের ফাঁকে, বাসে বসে, রিকসায় বসে ছেলেরা বা মেয়েরা ফোনে কথা বলেই যাচ্ছে পরপুরুষ বা পরনারীর সাথে। কী বিষয়ে কথা বলে, কেউ জানে না, আল্লাহ মাফ করুন।

যারা কোন হারাম থেকে বিরত রাখতে নিজেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়, চোখ সরায় হারাম থেকে, কান সরায় হারাম থেকে -- তারা অন্তরে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করে, অন্তর প্রশান্ত হয়, শান্তি অনুভব হয়। আখিরাতে তো আছে বিশাল পুরষ্কার। মুসলিম ভাই ও বোনরা তাই আল্লাহর জন্যও নিজেদেরকে সংযত করায় সেই পুরষ্কারের আগাম বার্তা জেনে নিন।

তবে আসেন, একটা টিপস দেই। খুব যদি হবু হউ বা হবু জামাইয়ের কথা মনে পড়ে আর আলাপ করতে ইচ্ছা করে তার সাথে। তাকে চিঠি লিখুন। নিজের কাছে রেখে দিন। মনের কথাগুলো বলুন তাকে সেই চিঠিতে। একদিন যখন সে আপনার স্বামী বা স্ত্রী হয়ে হাজির হবে -- তখন আপনি তাকে উপহার হিসেবে আপনার চিঠিগুলো দিবেন। দেখবেন সে কত পছন্দ করে! কারণ আপনার এই উপহার তার কাছে অমূল্য হয়ে থাকবে। এইটা একটা পার্সোনাল টিপস, কয়েকজন ভাইকে চিনি যারা নিজেরা গোপনে ডায়েরিতে লিখতেন হবু বউকে উপহার হিসেবে এই চিঠিগুলো দিবেন বলে।

নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র মানুষদের ভালোবাসেন। আপনি নিজের শরীর ও মনকে পবিত্র রাখার চেষ্টা করছেন তো?

30 March 2014

পর্নোগ্রাফি, কামসূত্র আর বিকৃত যৌনাচার যেভাবে পরিবারগুলোকে ধ্বংস করছে

​​
​​
​পশ্চিমা ইন্টেলেকচুয়ালরা এই সমাজটাকে "হাইপার সেক্সুয়ালাইজড" সমাজ হিসেবে বলে থাকেন। চিন্তা করে দেখুন, টুয়েন্টি-টুয়েন্টি খেলা দেখতে বসলেন, তাতে কমার্শিয়াল দেখছেন মোবাইল হ্যান্ডসেটের, তাতেও নারী-পুরুষ চুম্বনদৃশ্য। আপনি যদি টেলিভিশন থেকে দূরেও থাকেন, বিলবোর্ডে, পোস্টারে, ফেসবুকের অ্যাডগুলোতে আপনি যথেষ্টই যৌনতা দেখতে পাবেন। পুরুষ-নারীর কামকে জাগিয়ে এসব পণ্য ক্রয় বিক্রয় হয়। পশ্চিম নিয়ন্ত্রিত বিকৃত সংস্কৃতি ও ভারতের নির্লজ্জ-অশ্লীল সংস্কৃতি প্রভাবিত বাংলাদেশীও সংস্কৃতিও এখন বিকৃত, অসুস্থ হয়ে উঠেছে।

পশ্চিমারা নারীদেরকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে তুলে এনেছিলো অনেক আগেই। যদিও গত কয়েক শতাব্দী আগেও যে যৌনতার বিষয়গুলো এতটা প্রকট ছিলো না তা আমাদের স্বাভাবিক জ্ঞান ও চোখেই আমরা জানি। নারীর মাঝে জাগিয়ে তুলেছে এমন চিন্তা যে টিকে থাকতে হলে পুরুষের কাছে শারীরিকভাবে আকর্ষণীয় হতেই হবে... তারাও সেই চেষ্টা করেছে উন্মাদের মতন। পুরুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে গেছে নারীর শারীরিক সৌন্দর্য। ফলে, সেই পুরুষ-নারীদের কাছে ব্যক্তি জীবনে, বিবাহিত জীবনের স্বাভাবিক শারীরিক আনন্দগুলো আর সাধারণ লাগে না। তখন তারা কুরুচিপূর্ণ উপায় বের করে যৌনতাকে মেটাতে চায়। শরীরের যাবতীয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে ব্যবহার করেও তাদের খায়েশ মেটে না। তারা পর্নোগ্রাফিতে এইসব বিকৃত যৌনাচারকে সহজ করে আনতে চায়, কেননা স্বাভাবিক কোন কিছুই তাদের কাছে আর স্বাভাবিক নেই। যে শারীরিক বিষয়গুলো মানুষকে তৃপ্তি দেয়ার কথা, সেগুলোই তাদেরকে নিকৃষ্ট বিকৃত জন্তুতে পরিণত করে। শেষ পর্যন্ত তারা নারী-পুরুষ ছেড়ে সমলিঙ্গে আনন্দ খুঁজে, পশুদেরকেও ছাড়ে না (আস্তাগফিরুল্লাহ)

এসব সমাজ থেকে মুসলিম সমাজের মাঝে অনেক ধারণা যেভাবেই হোক চলে এসেছে; ফলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে কিছু বিষয় জায়েজ/নাজায়েজ কিনা এমন প্রশ্ন মুসলিম স্কলারদেরকে অবাক করে দেয়। বছরের পর বছর ধরে কামসূত্র পাঠ, পর্নোগ্রাফিক গল্প, চটি গল্প পড়তে ওয়েবসাইটে ঢুঁ দেয়া, পর্নোগ্রাফিক মুভিতে বিকৃত ভঙ্গিমায় ও বিকৃত নিষিদ্ধ উপায়ে কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করার দেখে দেখে পুরুষগুলোর মনে (ইদানিং নারীদেরও) গেঁথে যায়। সরলমনা স্ত্রীরা তাদের স্বামীর পাশবিক আচরণ টের পান বিয়ের পরে অন্তরঙ্গতায় এসে। সমাজে অজস্র পরিবারে সুখ পালিয়েছে, অনেক নারী নীরবে কেঁদেছেন, কাঁদছেন। পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি সেসব পুরুষদের মস্তিষ্কে ও চিন্তায় স্থায়ী বিকৃতি এনেছে। কী ভীতিকর! এইসব মানুষদের চিকিতসা প্রয়োজন তা সাইকোলজিস্টরা বলে থাকেন। ধীরে ধীরে থেরাপির মাধ্যমে এই নেশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু তাতে আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তাওবাহ করা প্রয়োজন। তাছাড়া ইসলাম সবকিছুতেই কোমলতা, লজ্জাশীলতা, হায়া শেখায়। সেটা অন্তরঙ্গ সম্পর্কতে গিয়ে পশুদের মতন বল্গাহীন হওয়াটা রুচিবিকৃতির পরিচায়ক, যা পরকালে ভয়াবহ পরিণতির সম্ভাবনা ধারণ করে।

পর্নগ্রাফি এখনকার ছেলেমেয়েদের কাছে ডালভাত হয়ে যাচ্ছে, যা বিশাল গুনাহ। পর্নোগ্রাফি থেকে শেখা বিকৃত যৌনাচার যখন পারিবারিক জীবনে প্রয়োগ করতে যায় তখন সেটা আরেকধাপ এগিয়ে যায়। এই ধরণের মানুষ কখনো সন্তুষ্ট হয় না। পর্নগ্রাফির নেশা তাদের শারীরিক তৃপ্তিকে নষ্ট করে ফেলে। অথচ মুসলিম পুরুষ বা নারী নিজেদেরকে নতদৃষ্টিতে, সংযত আবেগে চলার পরে বিবাহিত জীবনে পরস্পরের মাঝে সুন্দর উপায়েই আনন্দ খুঁজে পাওয়ার তথা ছিলো। স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক অন্তরঙ্গতাই তাদের পূর্ণ আনন্দের বিষয় হবার কথা ছিলো। আজকাল ছেলে মেয়েরা অন্তরঙ্গ জীবন সম্পর্কে শিখতে যায় 'কামসূত্র' থেকে, যা অশ্লীলতা আর নগ্নতার চুড়ান্ত বিষয়। স্কলারদের অনেকেই বলেন দাম্পত্য জীবনের প্রয়োজনীয়টুকু মানুষ আপনাআপনি শিখে যায়। তবে, ইসলামে অন্তরঙ্গতায় কতটুকু অনুমুতি আছে, কতটুকু নিষেধ --এগুলো সময়মতন জেনে নেয়া উচিত। ব্যাস! মনে রাখা উচিত, আল্লাহ কোমলচিত্ত, লজ্জাশীল ও পবিত্র মানুষদের পছন্দ করেন।

কেন এই কথা বলছি? দেখুন ভাই, আপনি একজন মানুষ। আল্লাহ মানুষকে কিছু শারীরিক, মানসিক যোগ্যতা দিয়ে পাঠিয়েছেন। ইসলাম আমাদেরকে সেগুলোর নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের জন্য বলেছে। আমাদের উদ্দেশ্য অনেক অনেক উঁচু, অনেক বিশাল, তাতে আছে শুধু মানুষ না, এই গোটা প্রাণীকূলের, পরিবেশকেও যথাযথ রাখার দায়িত্ব। আমাদের মন-হৃদয় আর চিন্তাগুলোই হবার কথা অনেক বিশাল। সেখানে আমাদের যুবসমাজও যেন যৌনতাকেন্দ্রিক অদ্ভুত বিচিত্র কিছু জান্তব চিন্তা নিয়ে বেড়ে উঠছে...  আল্লাহ আমাদের মুসলিম সমাজকে নগ্নতা-অশ্লীলতা-বেহায়াপনা-বিকৃতকাম-অবৈধ যৌনাচারের হাত থেকে রক্ষা করুন। আল্লাহ আমাদেরকে এমনভাবে চলার তাওফিক দিন যেন আমরা দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তি পেতে পারি।

29 March 2014

আপনি কি চান আপনার বিয়েটা হোক পবিত্রতার স্পর্শমাখা?

​​কখনো ভেবে দেখেছেন আপনার স্ত্রীকে/স্বামীকে আপনি যেদিন বলবেন, "তুমি আমার জীবনের অনেক অপেক্ষার ফসল। তোমার সাথে মনের কথাগুলো বলব বলে সাজিয়ে রেখেছি অনেকগুলো বছর ধরে..."

আপনি কি জানেন বিবাহিত জীবনের কত বড় আত্মবিশ্বাস আপনাদের এই অন্তর ও শরীরের পবিত্রতাটুকু? যারা সৎ, তাদের আত্মবিশ্বাস দেখেছেন? তারা জানেন তাদের অর্জনটুকু কষ্টসাধ্য। তখন প্রিয়জনেরা তাদের প্রতি এমনিতেই অনেক বেশি আকর্ষণ অনুভব করেন। তারা জানেন, এই মানুষটাকে বিশ্বাস করা যায়, এই মানুষটার প্রতি নির্ভর করা যায়।

যাদেরকে টেলিভিশনে দেখেন, পত্রিকায় দেখেন পণ্যের পাশের রূপ বেচতে, যারা ফেসবুকে ছবি আপলোড করে লোকের সস্তা কমেন্ট পেতে আনন্দবোধ করে -- তারা নিজেরাও নিজেদেরকে সস্তা করে ফেলে। নিজেকে তাদের তলে নিয়েন না, দূরে থাকুন।

আপনি আল্লাহর এক অমূল্য সম্পদ। ভুল করলে তাওবা করুন, আল্লাহকে বলুন তিনি যেন আপনাকে সাহায্য করেন শরীর ও মনের পবিত্রতার জন্য। যদি সৎ চরিত্রের কোন নারী বা পুরুষকে জীবনে চান, নিজেকে শুধরে ফেলুন।

আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদেরকে কিন্তু অপবিত্র হৃদয়ের মানুষের হাতে তুলে দেন না। আপনি চরিত্র উত্তম না হলে আপনি কখনই এমন মানুষকে জীবনে পাবেন না যে আপনার চক্ষুশীতলতাকারী জীবনসঙ্গী হবেন। জীবন কিন্তু অনেক বড়। বিয়ে আপনার জীবনের অনেক বড় একটা ঘটনা। সবাইকে ফাঁকি দিতে পারলেও আল্লাহকে পারবেন না কিন্তু...

চারিত্রিক স্বচ্ছতা দিয়ে আপনার স্বামী/স্ত্রীর কাছে আপনি যতটা প্রিয়/বিশ্বাসভাজন/অমূল্য হতে পারবেন-- লাখ লাখ টাকার বাড়ি-গাড়ি-গহনা দিয়েও তাকে মুগ্ধ করতে পারবেন না চরিত্রে আর নিয়াতে সমস্যা থাকলে। মনে রাখবেন, খারাপ লোকেরাও সৎ লোকের মূল্য বুঝে।

27 March 2014

ভাইয়া, পথে ঘাটে সুন্দরী-রূপসী নারীদের দেখে আকর্ষণ হয়, তাইনা?

​​আচ্ছা ভাইয়া, আসুন একটুখানি কথা বলি। পথে ঘাটে সুন্দরী-রূপসী নারীদের দেখে আকর্ষণ হয়, তাইনা? আপনি অবিবাহিত, ঠিক দ্রুত তেমন সম্ভাবনাও নেই বিয়ে হবার, তাই মন আরো উদাস হয়? পথে/স্কুলে/কলেজে/ভার্সিটিতে/ক্লাসরুমে আকর্ষণীয়া মেয়েদের দেখে বুকে দীর্ঘশ্বাস হয়? আশেপাশে সবাই যখন জোড়া বেঁধে ঘুরে, ফোনে ইটিশ-পিটিশ করে তখন নিজেকে একলা একলা লাগে?

জানেন তো, যে জিনিস সহজে পাওয়া যায়, তার ফলাফল কেমন হয়? 'সস্তার তিন অবস্থা' পড়েননি? যে মেয়েটাকে সহজেই আপনি পাবেন, সে কিন্তু আপনার হাত থেকেও *সহজেই* অন্য কারো হাতে চলে যাবে। যে মেয়েটার সৌন্দর্য আপনি দেখতে পাচ্ছেন, দেখে মুগ্ধও হচ্ছেন, সে তার সৌন্দর্য আরো অনেক লোকের কাছেই দেখিয়ে বেড়াবে। মানুষ এমনই, তাকে জোর করে বদলানো যায় না, চাপ প্রয়োগে মানুষ আরো বেশি প্রতিক্রিয়াশীল হয়। এই প্রক্রিয়াতেও আপনি তাকে 'ঠিক' করতে পারবেন না।

কী পারবেন জানেন? নিজেকে ঠিক করতে। আল্লাহকে ভয় করার সুযোগ আছে, তাওবা করলে তিনি মাফ করবেন আপনাকে। বিনিময়ে অল্প কয়েকদিনের দুনিয়াতে তো শান্তি আছেই, আখিরাতে মুক্তিও আছে।

এই সমাজেই অজস্র বোন আছে, যারা তাদেরকে পবিত্র রেখেছে, যারা তাদের শরীর ও মনকে এমন মানুষের জন্যই রেখে দিয়েছে যে তাদেরকে পূর্ণ অধিকার দিয়ে ঘরের কর্ত্রী করে, জীবনের সঙ্গিনী করে নিয়ে আসবে। আপনি কি এমন দ্বীনদার কোন নারীকে পেতে চান না? আপনি কি চান না আপনার সন্তানের মা এমন কেউ হোক, যিনি পবিত্র চরিত্রের, যিনি সন্তানদেরকেও তার মা ও তার বাবার মতন চরিত্রকে মুগ্ধ হয়ে গ্রহণ করার শিক্ষা দিবেন?

আসুন ভাই, সস্তা না হই, সস্তা এইসব তুচ্ছ/নোংরা/জঘন্য সংস্কৃতিতে হারিয়ে না যাই। নিজেকে যোগ্য করুন, দেখবেন আল্লাহ আপনার জন্য কোথা থেকে যে এক অসাধারণ নারীকে হাজির করেছেন যার দ্বীনদারী দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন।

আপনার কিন্তু বাজারের সব চকচকে পোশাক দেখে লাভ নেই, যে পোশাক আপনার দেহের সাথে সাইজে ভালো হয়, ফিটিং হয়-- সেটাই আপনি কিনে নেন। তেমনি, সস্তা সব পণ্যের মতন নারীদের দিকে ভ্রূক্ষেপ করবেন না, বরং এমন এক মানুষের জন্যই অপেক্ষা করুন যে আপনার জীবনের জন্য, আপনার পারিবারিক জীবনের জন্য অসাধারণ হবে, আপনারা দু'জনে মিলে জান্নাতে যাওয়ার পথে জ্ঞানার্জন ও আমল করতে পারবেন।

24 March 2014

যদি মনে করেন বিয়ের আগে প্রস্তুতি দরকার নেই তবে যেসব ক্ষতি হতে পারে

​​
​​​বিয়ের আগে সত্যিই অনেক প্রস্তুতি দরকার। যারা মনে করেন প্রস্তুতি ছাড়াই বিয়ে করলে সমস্যা নেই,তারা এখনকার সময়ে চারিদিকে দাম্পত্য কলহ এবং বিবাহবিচ্ছেদের পরিমাণ দেখলেই বুঝতে পারবেন মানুষে মানুষে অমিলগুলো এখন সংসারে সহাবস্থানে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যাই হোক, বিয়ের মূল প্রস্তুতিটা মানসিক, তবে এর সাথে আরো অনেক কিছুই চলে আসে। আপনাকে ফোকাসড হতে হবে। আবেগ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আপনাকে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে, আপনি কি আসলেই আপনার জীবনটা আরেকজনের সাথে শেয়ার করতে প্রস্তুত?

বিয়েতে যদি মনে করেন আরেকজন কেবল আপনাকে 'সার্ভিস' দিবে, তাহলে আপনি সম্পূর্ণ ভুলের উপরে আছেন যা আপনাকে অশান্তি এনে দিবে নিশ্চিতভাবে। ঠিক  উল্টোটা যদি হয়, আপনি যদি আরেকজনকে কী কী 'কর্তব্য' পালন করে দিবেন তা চিন্তা করেন, এবং সেই কর্তব্য সম্পর্কে ভাবতে ভাবতে যখন নিজের অভ্যাসগুলো নিয়ে ভাবতে পারবেন -- তখন আপনি কিছুটা বুঝতে পারবেন আপনার এখনকার আপনি মানুষটার সীমাবদ্ধতাটুকু। এই চিন্তাটুকু করে যদি তেমন কিছুই বের করতে না পারেন, নিশ্চিত থাকুন আপনি এখনও তেমন কিছুই বুঝেননি আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে।

বিয়ের মাঝে আল্লাহ অনেক প্রশান্তি, আনন্দ ও দয়া রেখেছেন। কিন্তু একজন মানুষ কিন্তু মূলত দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সংসার শুরু করে। একজন পুরুষ যখন বিয়ে করে, তখন সে তার স্ত্রী হওয়া নারীটির বাকি জীবনের সম্পূর্ণটার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে নেয়। চিন্তা করে দেখেছেন তো আপনি কত বিশাল দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন? একইভাবে, একজন নারী যখন তার স্বামীর সংসারে যান, তিনি তার স্বামীর সংসারটির কর্ত্রী হয়ে তিনি সেই স্বামীর পরম বন্ধু হয়ে তার দেখাশোনা এবং মা হয়ে তার সংসারের সকল সন্তানদের জন্মদান এবং তাদের বড় করার মতন কিছু বিষয় কাঁধে নিয়ে ফেলেন। বিয়ের মূহুর্তটির পর থেকে এই ধাপগুলোসহ আরো অজস্র বিষয় অবধারিতভাবেই একজন পুরুষ বা নারীর কাঁধে চেপে বসে।

তাই, বিয়ে নিঃসন্দেহে অবহেলা বা হালকা করে নেয়ার বিষয় নয়। আপনার জীবনের সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তগুলোর একটি এই বিয়ে। সুতরাং, বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে আবেগের চেয়ে একটু মাথা ঠান্ডা করে নিজের যোগ্যতা নিয়ে ভাবুন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ আপনাকে অনেক গুণ দিয়েছেন এবং অবশ্যই আপনি আরো কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে আছেন। কী করলে আপনি নিজেকে উন্নত করতে পারবেন, কীভাবে সেই সংসার জীবনে শান্তি আনতে পারবেন সেই চিন্তা করে কাজ করতে থাকুন।

তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, বিয়ে করবেন যাকে, তার কিছু স্বভাব এবং আচার-আচরণ আছে, যা আপনার চেয়ে ভিন্ন হবে। তার কথাবার্তার বিষয় এবং ভালোলাগার বিষয়েও প্রচুর অমিল থাকবেই। তার পরিবার থাকবে, সেই পরিবারের প্রতি তার প্রচুর কর্তব্য থাকবে, আবেগ এবং জটিলতা থাকবে। যেই আপনি কথাবার্তা ভিন্ন হওয়ার কারণে অনেক বন্ধুদেরকে এড়িয়ে চলেছেন, সেই আপনি কি প্রায় পুরো অচেনা মানুষটির গোটা জীবনটাকে আপনি মেনে নিয়ে সম্ভাব্য কর্তব্যটুকু করতে মানসিকভাবে প্রস্তুত তো?

এই প্রস্তুতিগুলো না থাকলে দেখা যাবে আপনি হয়ত এমন কিছু আচরণ করে বসবেন যাতে আপনার সেই স্বামী বা স্ত্রী আঘাতপ্রাপ্ত হবেন। তার সেই প্রতিক্রিয়া থেকেই হতে পারে আপনার সংসারের অশান্তির শুরু। তাই ((যদি বিয়ে করতেই চান)) ব্যক্তিগত চরিত্র, চিন্তার ধরণ, সহিষ্ণুতা, সহমর্মীতা, সচেতনতা, পরোপকারিতা, দায়িত্ববোধ নামক গুণগুলো যথাসম্ভব অর্জনে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন!!

আল্লাহ আমাদেরকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে দেন না যা আমাদের সমাধানের অতীত। এই বিষয়গুলোও অসম্ভব নয়। তবে, যদি কল্যাণ চান, যদি সুন্দর একটি দাম্পত্য জীবন আশা করেন, যদি সুখী পরিবার কামনা করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই এইসব কিছু বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। একটুখানি ভাবুন, নিজেকে নিয়ে কাজ করুন, প্রস্তুত হোন -- ইনশা আল্লাহ আপনি কল্যাণপ্রাপ্ত হবেন।

সবচেয়ে বড় কথা, আমরা কিছুই করতে পারিনা যদি আল্লাহ সাহায্য না করেন, যদি আল্লাহ কবুল না করেন। তাই, আল্লাহর কাছে খুব বেশি করে দোয়া করুন। দোয়া একটি ইবাদাত, দোয়া ঈমানদারদের জন্য এক অব্যর্থ অস্ত্র যা অসম্ভবকে সম্ভব করে দেয়। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ আমাদের উত্তম স্বামী/স্ত্রী হবার এবং পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ আমাদেরকে সুন্দর একটি সমাজ গঠনের তাওফিক দান করুন।

19 March 2014

বিয়ের পরে দেখা গেলো মেয়ে পুরাই অন্যরকম!

​- ভাই, বিয়ে করবেন শুনতেছি...

- হুমম।

- ভাই, আপনার ভয় লাগে না? আপনি যেমন চাইসেন, মেয়ে যদি তার পুরা উলটা হয়...

- ভয় দেখাইতে চাচ্ছ?

- না। বলতেসি আরকি। অনেক মানুষই নাকি যা দেখে বিয়ে করে, পরে নাকি দেখে অন্যরকম।

- আমি কি নিজের উপরে ভরসা করে স্ত্রী খুঁজবো?

- ভরসা আল্লাহর উপরে কে না করে?

- হয়ত সবাই করে। কিন্তু তোমার অন্তরের খবর তুমিই জানবা।

- ঠিকাছে ভাই, বুঝায় বলেন কেমনে আত্মবিশ্বাস পাইতেসেন।

- দেখো ভাই, সূরা ফুরকানে শেখা সেই দোয়াটা (রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াযিনা ওয়া যুররিইয়্যাতিনা কুররাতা আ'ইয়ুনিন ওয়া জা'আলনা লিল মুত্তাকি'না ইমামা) আমি নিয়মিত পড়ি আর অন্তরেও অনুভব করি। অর্থাৎ,আমি একটা "কুররাতুল আ'ইন" আমার জীবনসঙ্গী চাই। এর মানে কিন্তু এমন না সুন্দরী, রূপসী, বংশীয়া, ডিগ্রিধারী...  এর মানে এমন কিছু যে মানুষটার উপস্থিতি আমার চোখ শীতল করবে, অন্তরকে শান্তিতে ভরিয়ে দিবে। আর আমিও তার যোগ্য হতে নিজেকে "'মুত্তাকিনদের ইমামদের অন্তর্ভুক্ত" করে নিতে আল্লাহর কাছে দোয়া করছি একই দোয়ায়। ছোটখাটো কীসের মাঝে আল্লাহ শান্তি মিলিয়ে দিবেন, সেইসবের মালিক তো আমি না। অন্তরের মালিক তিনি। দুনিয়ার সকল সম্পদের মালিকও তিনি।

- ভাই, আপনার চেনাজানা তো কেউ নাই, এমন মেয়ে তাহলে কোথা থেকে পাবেন?

- আল্লাহর কাছে দোয়া করতেসি। দোয়া কেন বিফলে যাবে? এটা কোনদিন হতে পারে না। আমি কী করেছি, কী ভাবছি সবই আল্লাহ জানেন। আমার দায়িত্ব আমি তার হাতেই তুলে দিয়েছি, তিনিই আমার উত্তম অভিভাবক। আমি আমার কাজটুকু করবো। দেখার সময় দ্বীনদার মেয়ে খুঁজবো।  ইনশা আল্লাহ এটা ব্যাপার হবে না। আল্লাহর উপরে ভরসা করে সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করলে কখনো কেউ বিফল হয় না।

- জাযাকাল্লাহ খাইর ভাই। অনেক কিছু শিখলাম। সাহস পেলাম।

12 March 2014

হারাম প্রেম বনাম হালাল বিয়ে

যারা হারাম সম্পর্ক (প্রেম) করে, তাদের মাঝে সারাক্ষণ একটা চোর-চোর ভাব থাকে। তারা অচেনা ছেলের/মেয়ের সাথে আজেবাজে সময়ে বেড়ায়, রিকসায় চড়ে যা-তা করে, ফাস্টফুডে ঢুকে লুকিয়ে থাকে, ফোনে আরো অনেকের সাথে আলাপ করে। কেউ সন্দেহ করে কিছু বললেই তাদের টেনশন হয়। প্রেমিক বা প্রেমিকার নামে কেউ কুৎসা বললে তাদের বিশ্বাস হয়ে যায় কেননা তারা নিজেরাই তো একটা অন্যায় ও অশ্লীল আচরণ করছে। এভাবে সন্দেহ আর অশান্তি তাদের মনে গেঁড়ে যায় একদম। প্রেম যারা করে তাদের চরিত্রে তাই অস্থিরতা বেশি হয়, দৃঢ়তার অভাব হয়।

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় বিয়ে করে, তারা জানে প্রিয় মানুষটা সমস্ত দুনিয়ার ফিতনা থেকে বেঁচে থাকে, তার কাছে ফিরে তার সমস্ত আবেগ ভাগাভাগি করতে। তাদের প্রতিটি বাক্য আর খুনসুঁটি তাদের আত্মবিশ্বাস জাগায়। তাদের দু'জনার উপস্থিতিতে আনন্দ ভাগ করে নেয়ার সময়গুলোতে তারা জানে, এই মূহুর্তগুলো ইবাদাতের সমতূল্য কেননা তারা অন্যায় সমস্ত পথ থেকে দূরে থেকে আল্লাহর হালাল করে দেয়া উপায়ে আনন্দ উপভোগ করছেন...

তাই, বিবাহপূর্ব প্রেমকে না বলুন। প্রেম থেকে দূরে থাকুন। নিজের চরিত্রকে সংরক্ষণ করুন। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় বিয়ে করার চেষ্টা করুন। যদি বিয়ের সম্ভাবনা দেখতে না পান খুব শীঘ্রই, তবে রোজা রাখুন এবং আল্লাহর কাছে প্রচুর দোয়া করুন।আল্লাহ একদিন আপনার জন্য পথ খুলে দেবেন ইনশা আল্লাহ, সহজ করে দিবেন আপনার পথ। নিশ্চয়ই আল্লাহ যখন চান, তখনই বান্দাকে তার প্রিয় উপহারটি দান করেন। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কেবলই তার কাছে চায়, আল্লাহ তাকে দান করেন, শ্রেষ্ঠতম উপহারটি তাকে দান করেন। আল্লাহ আমাদের মুসলিম ভাইবোনদের রহম করুন।

8 March 2014

অবস্থানে ছোট মানুষকে সম্মান করা একটা বড় গুণ

অবস্থানে ছোট মানুষকে সম্মান করা একটা বিশাল বড় গুণ। হতে পারে আপনি আপনার সামনে থাকা মানুষটির থেকে উন্নত-- জ্ঞানে, গুণে, সম্পদে, রূপে, বংশমর্যাদায়। কিন্তু প্রতিটি মানুষই একটা প্রাণ, তিনিও আল্লাহর বান্দা, তিনিও হয়ত আপনার মতই চেষ্টা করছেন কষ্ট করে বেঁচে থাকার জীবিকার্জনে আর আল্লাহর পথে এগিয়ে যেতে।

হতে পারে একটা মানুষের সামাজিক অবস্থান তেমন ভালো নয়, অথবা তার বুদ্ধি হয়ত বেশি নয়; কিন্তু তার হৃদয়টাই কিন্তু আল্লাহর কাছে বিবেচ্য বিষয়। আমরা যদি কাউকে অপমান করি, যদি কাউকে ছোট করি, তাহলে তিনি হৃদয়ে কষ্ট পেতে পারেন। কাউকে অকারণ আঘাত দেয়া থেকে সাবধান হওয়া উচিত আমাদের...

ধরেন একটা রিকসাওয়ালা কিংবা মজুর, তিনি কাজটা হয়ত বড় কিছু করছেন না, কিন্তু তার একটা আত্মমর্যাদাবোধ আছে। সেই বোধকে আমাদের আহত করা উচিত নয়... একজন মানুষকে সম্মান করবো আমরা যতক্ষণ তিনি কারো ক্ষতি না করছেন, অন্যায় না করছেন। নীতিহীন, অত্যাচারী, খারাপ লোকের প্রতি নিজের ভেতর থেকে ভালো অনুভব করা কিন্তু আবার পথভ্রষ্টতার লক্ষণ...

আমরা যদি মানুষকে রহম না করি, আল্লাহর কাছে কেমন করে রহম পাওয়ার আশা করতে পারি? যারা অন্য আরেকজন মানুষের প্রতি দয়া দেখায়, আল্লাহ তাদের দয়া দেখান। 

আমাদের অন্যদের প্রতি সম্মান ও সহমর্মীতা প্রকাশের গুণটি রপ্ত করার চেষ্টা করা উচিত। আমাদের ব্যক্তিগত আর পারিবারিক জীবন সুন্দর হবে।

​পবিত্রতা কি শুধুই শরীরের?

​পবিত্রতা কি শুধুই শরীরের? আল্লাহর নির্দেশ মানবেন বলে হয়ত কোন নারীকে/পুরুষকে ছুঁয়ে দেখা দূরে থাক, কথাবার্তাও এড়িয়ে গিয়েছেন আপনি... কিন্তু অনলাইনে অর্থাৎ ব্লগে, ফেসবুকে কমেন্টিং, চ্যাটিং করে আপনি যে কথাগুলো বলছেন অচেনা অজানা গাইর মাহরাম পুরুষ/নারীদের সাথে তা কি আপনার মনের পবিত্রতাকে টিকিয়ে রাখছে? প্রশ্নগুলো নিজেকে করুন...

আপনার মনের কিছু আবেগ আছে, কিছু চাওয়া আছে যা হয়ত জমিয়ে রেখেছিলেন ছোটবেলা থেকে, ফেসবুকে এসে তা অনেক ছেলেমেয়ের মাঝে উজাড় করে দিলেন... আপনি কি সেই অনুভূতিগুলোকে আর ফিল করতে পারবেন? তার চেয়ে বড় কথা, মনের পবিত্রতার কথা কি ভেবেছেন কখনো? যে আপনার চোখের সামনে গাইর মাহরাম পুরুষ/নারী বসে থেকে অন্তরঙ্গ আলাপের সাহস করে নাই, সে আপনি অবলীলায় আপনার অনেক ব্যক্তিগত কথা ও আবেগ ভাগাভাগি করছেন এমন কারো সাথে যাকে আপনি একদমই চেনেন না... আপনার স্ত্রী/স্বামী হিসেবে যিনি আসবেন, তিনি কি আপনার এইসব কমেন্টিং/চ্যাটিং পছন্দ করবেন? সবচেয়ে বড় কথা, এই কথাগুলো সবার কাছে প্রকাশিত হওয়াকে কি আপনি পছন্দ করবেন? যদি না করেন, তাহলে কিন্তু তা গুনাহের পর্যায়ে পড়বে। আসুন, ক্ষতির মুখে পড়ার আগেই অনুশোচনা করে সতর্ক হই।

হে আমার মুসলিম ভাই/বোন, একটু সচেতন হোন। আল্লাহর দেয়া নির্দেশগুলো কিন্তু আমাদেরকে হালকা করার জন্য। আমরা ভুল করে অকারণ যুলুম যেন নিজেদের না করি, তাই আমাদেরকে কিছু নির্দেশ ও আদেশ দেয়া রয়েছে। নিঃসন্দেহে তা আমাদের জন্য কল্যাণের। তাই, আসুন আমরা ভুল করে হলেও এমন কাজ না করি যা আমাদের অমূল্য সম্পদ - শরীর ও মনের পবিত্রতাকে নষ্ট করবে... আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র জীবন দান করুন। আমিন।

7 March 2014

অনেকেই সুখী তা তো জানেনই, আর আপনি?

​​
​আপনার জীবনটা আর কারো মতন না। ফেসবুকে প্রচুর বিয়ের পোস্ট দেখে, বিবাহিত ভাই-বোনদের দাম্পত্য সুখের প্রদর্শনী দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। সবার জীবনেই অজস্র সমস্যা, কারও সমস্যা লোকে দেখতে পায়, অন্যদেরগুলো পায় না। তাছাড়া সত্যিকারের আনন্দ যাদের হৃদয়ে, তারা কখনো লোককে দেখাতে যায় না, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করে আর লোকের কল্যাণ কামনাতেই তাদের সময় কেটে যায়। মনে রাখবেন, আল্লাহ আপনার যে জীবনটা দিয়েছেন, তার নিয়ামতগুলো, তার জটিলতাগুলো একান্তই আপনার, খুব কম মানুষের জীবনের সাথে তার হুবহু বা অর্ধেক মিল পাবেন। তাই অনুরোধ রইলো, অন্যদের জীবন দেখে, সমস্যা ও তার সমাধান দেখে বিভ্রান্ত হবেন না, সংশয়ে পড়বেন না। আদেশ-উপদেশ-নির্দেশ কেবলমাত্র আল্লাহ ও তার রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছ থেকেই নিতে হয়। আর সেটা নিজ জীবনে প্রয়োগ করতে হয়।

নিশ্চিত থাকুন, আপনার প্রয়োজনীয় কোনকিছুর কিছুমাত্র কম আপনাকে দেয়া হয়নি। আল্লাহর একটিমাত্র নিয়ামাতের বিনিময় আমাদের গোটাজীবন পরিপূর্ণ ঈমানের সাথে পার করলেও হবে না। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার প্রতি সন্দেহ ও অভিমানের দুঃসাহস এলে নিজেকেই বুঝিয়ে শান্ত করুন, নিজেকে কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে তৈরি করুন। দোয়া করুন, কেননা দোয়া এক অব্যর্থ অস্ত্র, একটি ইবাদাত, দোয়ায় ভাগ্য ফিরায়।

আল্লাহর আদেশ, রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ জানতে পারলে সাথে সাথে মানতে ইচ্ছা করলেও যদি কিছু পথ কঠিন মনে হয় -- সেই আল্লাহর কাছে হাত পেতে কাঁদুন, যিনি এই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে রিযিক দান করে তাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন, যিনি মুসার (আলাইহিস সালাম) সামনে সাগরের মাঝ দিয়ে পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন, যিনি ইউনুসকে (আলাইহিস সালাম) মাঝের পেটে বাঁচিয়ে রেখে আবার তাকে তীরে তুলে দিয়েছিলেন, যিনি ইব্রাহিমকে (আলাইহিস সালাম) আগুনের লেলিহান শিখার মাঝে নিক্ষেপ করার পরেও তাকে শান্তিময় বাগান তৈরি করে দিয়েছিলেন, যিনি ইব্রাহিম খলীলুল্লাহকে বার্ধক্য এসে পড়ার পরেও ইসমাঈল ও ইসহাকের মতন দু'জন সন্তান দান করেছিলেন, যিনি যাকারিয়্যাহ আলাইহিস সালামকে অনেক বয়সকালে ইয়াহইয়া আলাইহিস সালামের মতন সুযোগ্য নাবী সন্তান হিসেবে দিয়েছিলেন।

আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই যার কাছে সাহায্য চাইতে পারি, আল্লাহ ছাড়া কেউ নেই যে আমাদেরকে কিছু দিতে পারেন। সমস্ত কল্যানের মালিক আল্লাহ, সমস্ত ভালোবাসা ও শান্তির মালিক আল্লাহ। তার কাছেই ভিক্ষা চাইতে হয়, তার কাছেই আবেদন করতে হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা কবুলকারী, দোয়া কবুলকারী...

আমার নারী, আমাদের নারী ও নারীমুক্তি

​​বেগম রোকেয়া 'জাগো গো ভগিনি' বলে ডাক দিয়েছিলেন ঠিকই। সত্যিকার অর্থে আমাদের বোনেরা জাগেননি। আরো পিছিয়েছেন। অন্তরমহলে বন্দী ছিলেন, তারা এখন পুরুষের লোলুপতায়  বন্দী হয়েছেন। ক্যামেরার সামনে নিজেদেরকে মেলে দেয়ার অদৃশ্য কারাগারে তারা বন্দী করেছে নিজেদেরকে। চেনা-অচেনা পুরুষের কাছে শরীর আর রূপের প্রশংসা শোনার জালে বন্দী করেছে নিজেদেরকে। কর্মজীবী হতে চেয়ে নিজেদেরকে দিনরাত পুরুষ করতে চেয়েছে নারী, অথচ পুরুষ কিন্তু নারীত্ব চায়নি।

নারীমুক্তি হতে পারতো বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির মাধ্যমে। বেগম রোকেয়া এটাই আহবান করেছিলেন যেন মানসিক দাসত্ব থেকে মুক্ত হয় নারী। বাংলার নারীরা মানসিক মুক্তি পায়নি কয়েকশত বর্ষ পেরিয়ে গেলেও। থাক সে কথা...

অনলাইনে নারীদেরকে নিজেদের মুক্তি করতে বাংলাদেশের নারীদের জন্য সত্যিকারের ইন্টেলেকচুয়াল প্ল্যাটফর্ম নেই বলেই মনে হয়ছে। বোনেরা যতই নারী নিয়ে লিখতে যান, তারা পুরুষবিদ্বেষী লেখা লিখে বসেন। ফলে যা হবার তাই হয়, পুরুষ আরো তাতিয়ে উঠে, কাজের কাজ হয় না। আমি মুখ্যু মানুষ, অনুরোধ রাখবো পুরুষবিদ্বেষ ফ্রেমে না আটকে থেকে আমাদের বোনেরা ও ভাইয়েরা নারী নিয়ে লিখতে গিয়ে আমাদেরকে চমকৃত করবেন এমন সব আয়োজনে যেখানে নারী ও পুরুষ যে একে অপরের পরিপূরক সেই শিক্ষাটা পাওয়া যায়।

আমার মনে হইসে, আমাদের অনেক বেশি অভাব আত্মিক উন্নয়নের, অনেক বেশি অভাব জ্ঞানের। তা পুরুষ হোক, অথবা নারীরই হোক। কেউ নিজেদেরকে নিয়ে তেমন ভাবতে চায় না, অপ্রাপ্তির হিসেব করলে কোনদিন প্রাপ্তি একটা বাড়ে না, কেবল দুঃখ বাড়ে। আর এইরকম অজস্র অনায্য অভ্যাসে ভরা সংসারে পরিবর্তনের জন্য লাগবে অন্তর থেকে পরিবর্তন, প্রথা আর চিন্তাধারার পরিবর্তন।

নারীর উন্নতির জন্য পুরুষের সাহায্য দরকার, পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো দরকার। নারীর 'সমান অধিকার' নামক বিচিত্র শব্দ থেকে বেরিয়ে এসে 'প্রয়োজনীয় অধিকার' অর্জন করা উচিত। মা হতে পারেনা পুরুষ, কোমলতা আর ভালোবাসার দৃষ্টান্ত দেখাতে নাম আসে না পুরুষের; দিনে-রাতে, যেখানে-সেখানে যেন-তেনভাবে কাজ করার যোগ্যতা নেই নারীর, শারীরিক ও মানসিক প্রবল চাপে পিষ্ট হয়ে একলা চলতে পারে না নারী...

হয়না তবু জোর করে হওয়ানোর এই অদ্ভুত চেষ্টার বোকামি করতে না গিয়ে নিজ নিজ কর্তব্য, দায়িত্ব ও ভালোবাসা বুঝে পেতে যতটুকু শ্রম দেয়া দরকার -- সেই জ্ঞানটুকু অর্জনে চেষ্টা করা উচিত পুরুষ এবং নারী উভয়েরই...

28 February 2014

যারা প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়ে দুঃখে ভুগছেন তাদের জন্য লেখা

অনেক ভাই এবং বোন ভুলে নানান প্রেমঘটিত বা হৃদয়ঘটিত সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে। তাদের জীবনটা যন্ত্রণায় জর্জরিত হয়ে যায়। যারা বুঝেন তারা ভুল করেছেন, তাদের পিছু ছাড়েনা সেই স্মৃতি কিংবা সেই যন্ত্রণাগুলো। হয়ত তারা নিজেদেরকে খারাপ ভাবতে থাকেন বা মনে করেন যে তারা আর আগের মতন 'পবিত্র' নেই।

কারো কারো মনে হয়, আল্লাহ হয়ত তাকে আর মাফ করবেন না, তিনি হয়ত আর পবিত্র একজন জীবনসঙ্গী পাবেন না। অথচ যারা না বুঝে ভুল করে ফেলে এবং পরে ভুল বুঝতে পেরে তাওবা করে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেন। আল্লাহর ক্ষমাশীলতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা না থাকলে তখনই আমরা এরকম ভুল চিন্তা করতে থাকি...

যারা ভুল করে ফেলে, তাদের উচিত তাওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসা। ভুলগুলোকে ঢেকে ফেলে উত্তম কাজ। তাই আমাদের উচিত ইসলামকে শেখার কাছে নিয়োগ করা নিজেকে, আল্লাহর দ্বীনের পথে সময় ব্যয় করা, নামাজে নিয়মিত হওয়া, কুরআন পড়া। ইসলামের পথে অন্যদেরকে ডাকা। মানুষের উপকার করা উচিত, সাদাকাহ করা উচিত।

আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে চাইতে হয়। পবিত্র জীবনসঙ্গীও দোয়া করে চাইতে হয়। আল্লাহ সমস্তু দোয়া শোনেন। পবিত্রসঙ্গী পাওয়ার সৌভাগ্য যার হয়, তিনিই বুঝেন এটা কতবড় এক প্রাপ্তি, কত বড় এক নিয়ামাত। এই বিশাল পুরষ্কার পেতে হলে আল্লাহর কাছে শেষরাতে নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত, আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করে কান্নাকাটি করা উচিত।

আল্লাহ আমাদের ভাইবোনদেরকে ভুল থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন, ভুল বুঝে ফিরে তাওবা করে দ্বীনে আত্মনিয়োগ করা উচিত। আল্লাহ আমাদের জীবনকে কবুল করুন।

23 February 2014

ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এবং একটি এক্সট্রা

​​বোনেরা 'ওয়েডিং ফটোগ্রাফি' টাইপের পেইজগুলোতে যত কম ঘুরঘুর করবেন, আপনাদের মানসিক ও আত্মিক স্বাস্থ্য ততই ভালো থাকবে। ভাইদের তো ওইসব এলাকায় যাওয়া নিষিদ্ধ, তারপরেও গেলে, বোঝাপড়াটা আল্লাহর সাথেই করবেন :)

হে আমার বোন, নিজেকে প্রদর্শিত করার, লোকজনকে নিজের সৌন্দর্যে মুগ্ধ করাতে যেই আয়োজন তা রীতিমত অন্যায়। আপনার সৌন্দর্য কেবলই আপনার স্বামী জন্যই আয়োজিত হওয়া উচিত।

তাছাড়া, অর্থনৈতিক মন্দা সবখানে। ওয়েডিং ফটোগ্রাফির জন্য যে আয়োজন -- শাড়ি, গহনা, বিউটি-পার্লার, ফটোগ্রাফার এনে আপনার এই আয়োজনটা 'স্মৃতি' ধরে রাখার নামে অর্থের যথেচ্ছা ব্যবহার নয় কি? আপনি বরং অপচয় না করে এই সমাজের হাজার হাজার অভাবী মানুষের কারো জীবনকে সুন্দর করতে সাদাকাহ করে দিন। আল্লাহ আপনার এবং আপনার দাম্পত্য জীবনকে কল্যাণে ভরে দিবেন ইনশা আল্লাহ।

* *

হৃদয়ের ক্যামেরায় অডিও ভিজুয়াল রেকর্ডিং করুন
​​
বিয়েতে আর বিবাহিত জীবনে ডিয়েছেলার ক্যাম্রা (DSLR camera) দিয়ে আপনার আর আপনার বউয়ের রোমান্টিক টাইমগুলো লোকজনকে দেখিয়ে তাদের চোখের ক্ষুধা না মিটিয়ে

নিজের চোখের লেন্স দিয়ে, হৃদয়ের ক্যামেরায় অডিও ভিজুয়াল রেকর্ডিং করুন, বাকিটা জীবনে সুখস্মৃতি থাকুক সময়গুলো -- তাতে কারো ভাগ না থাকুক, আপনার মূহুর্তগুলো কেবলই আপনাদের থাকুক।

আল্লাহর বিধান মানুন, ভুল এড়িয়ে চলুন, পাপ এড়িয়ে চলুন, আফসোস এড়িয়ে চলুন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করুন।

* * * * *
কীরে! এখনো বিয়ে করিস নি কেন? দ্বীনদার মেয়ে খুঁজে পাস নি?
- একটা পেয়েছিলাম।
- বিয়ে করলি না কেন?
- সেও তো একটা দ্বীনদার ছেলে খুঁজছিল!!
এমন কথোপকথন তো আজকাল অনেকেরই জীবনের বাস্তবতা। এরকম যেন না হয়। আল্লাহ আমাদের আত্মার সাথী হিসেবে যাদের নির্ধারণ করে রেখেছেন, তাদের সাথে যেন তাড়াতাড়ি মিলিয়ে দেন।
[ কথোপকথনটি সংগৃহীত]

* *

সত্যিকারের শক্তিশালী পুরুষেরা জানে কীভাবে গাইর মাহরাম নারী থেকে দৃষ্টিকে অবনত করতে হয়।

22 February 2014

বিয়ের আলাপ যখন আগাতে থাকবে তখন ইস্তিখারা করুন

আমাদের উচিত আল্লাহর সাথে নিজেদের সম্পর্ককে গভীর করার চেষ্টা করা। বিয়ে এই ক্ষেত্রে একটা ভালো উপলক্ষ হতে পারে। আপনার বিয়ের আলাপ যখন আগাতে থাকবে, কিংবা আপনি যখন নিয়াত করছেন বিয়ের জন্য, আপনি নফল ইবাদাতের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।

আল্লাহর কাছেই সাহায্য চান, মানুষের কাছে না চেয়ে। আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টির মালিক, তার হাতেই সমস্ত সম্পদ। তিনি যদি আপনার জন্য কল্যাণ চান, তবে কেউ ঠেকাতে পারবে না। তিনি যদি না চান, তবে কেউ দিতে পারবে না। তাই আপনার সমস্ত চাওয়া হোক আল্লাহর কাছে।

নফল ইবাদাতের আগে তো ফরজ। যদি এমন হয়ে থাকে যে আপনার ফরজ ইবাদাতগুলোতে আপনি নিয়মিত নন, তবে শীঘ্রই নিয়মিত হোন। আল্লাহর কাছে বান্দা যেকোন সময়েই চাইতে পারে। তবে যারা তার আদেশকে মেনে চলে, তারা তার নিকটবর্তী। তাই নামাজে নিয়মিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বিয়ের সময়টা হোক আপনার অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি আমলে পূর্ণ, বেশি ঈমানে পূর্ণ। আর এই বেশি বেশি জিনিসগুলো যেন মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কেবল বৃদ্ধিই পায়। ঈমানে এবং আমলে আপনি আল্লাহর আরো নৈকট্য লাভ করুন। 


* * * * *
[২]

​ইস্তিখারা, বিয়ে হোক বা অন্য সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই হোক, আল্লাহর কাছে চাওয়ার একটা অদ্ভুত ডাইমেনশান আছে। আপনি একটা বিষয় নিয়ে হয়ত চিন্তা করছেন কোন দিকে আগাবেন, কী করবেন --সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার উপায় বুঝতে পারছেন না। এমন অবস্থাতে পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই পড়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে। কিন্তু মুসলমদের বিষয়টা আলাদা। সে আল্লাহর কাছে রাতের বেলা তাহাজ্জুদে কাঁদে আর বলতে থাকে আল্লাহ এই বিষয়ে যদি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার কল্যাণ থাকতে তাহলে আমার জন্য একে সহজ করে দেন। আর যদি আপনি এতে আমার কল্যাণ মনে না করেন তাহলে একে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দেন...

বিষয়টা এমন না যে যা নিয়ে/যাকে নিয়ে আলাপ হচ্ছে সে/তা কম আকর্ষণীয় বা কম ভালো। বরং, আপনি দু'আ করবেন এতে আপনার জন্য কল্যাণময়তার জন্য। আর আল্লাহর কাছে এই দু'আ আপনি করবেন নামাজ পড়ে...  মনে রাখবেন, আপনাকে ক্রমাগত আল্লাহর কাছে ইস্তিখারার নামাজ আদায় করে দোয়া করতে থাকা উচিত। যদি আল্লাহ সব 'খাপে-খাপ' মিলিয়ে সহজ করে দিতে থাকেন, আপনার পছন্দ-অপছন্দ, সংশয় ছাপিয়ে কাজটা যেদিকে সহজ হয়, সেদিকেই পাল মেলে দেয়ার একটা ব্যাপার...  এভাবে হয়ত আপনি যা পাবেন, তাতেই আল্লাহ আপনার জন্য কল্যাণ রেখেছেন। আল্লাহ গায়েবের খবর জানেন, আমরা কিছুই জানিনা, আমরা কিছুই বুঝিনা।

অনেক সময় অনেক অনাকর্ষণীয় বস্তুর মোড়কে অনেক ভালো জিনিস থাকে, অনেক সময় তার বিপরীতটাও হয়। আল্লাহর উপরে নির্ভর যারা করে, তারা ইনশা আল্লাহ সহজ পথটর সন্ধান পাবে। এইটুকু হলো বান্দার উপলব্ধি...

স্কলারদের আলাপ পড়তে এই লিঙ্ক দেখুন :
http://learningdeen.wordpress.com/2012/07/22/istikhara/

আপনার কি মনে হয় না আপনার সঙ্গীটি এই মূহুর্তে কেমন আছেন?

​​আপনার কি মনে হয় না আপনার সঙ্গীটি এই মূহুর্তে কেমন আছেন? আল্লাহ আপনাকে এখনো হয়ত তার সাথে মিলিয়ে দেন নি। কিন্তু হয়ত এই শহরেই, অথবা এই দেশেই, অথবা এই পৃথিবীরই অন্য কোন প্রান্তে সে আপনারই মতন সময় পার করছে। হয়ত তার মনের আবেগ, স্বপ্ন-ভালোবাসার অনেক অনুভূতি সে আপনার জন্যই আপনার মত করেই জমা করে রাখছে... যেদিন আপনার সাথে নতুন সংসার শুরু হবে, সেদিন থেকে ধীরে ধীরে এই ভালোবাসার অনুভূতিগুলো আপনার জন্য ঢেলে দিবে... 

আপনি যেমন এই নোংরামির সংস্কৃতির নখরের আঁচড়ে আহত, তিনিও হয়ত। আপনার মত করে তার হৃদস্পন্দনেও আল্লাহর কথা স্মরণ করে, আপনার মতন করে তিনিও চাইছেন যেন আল্লাহ আপনাকে তার সাথে শীঘ্রই মিলিয়ে দেন। 

নিজেকে অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে দূরে রাখুন। অনাগত সেই মানুষটার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় আপনি অপেক্ষা করতে থাকুন। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীকে আল্লাহ হেফাজত করেন, তার চরিত্রকে হেফাজত করেন। আল্লাহ যেন এমন কারো সাথেই আপনাকে মিলিয়ে দেন, যাকে তিনি ভালোবাসেন এবং যে আল্লাহকে ভালোবাসে। আল্লাহ যেন এমন মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার এবং জীবনসঙ্গী হবার তাওফিক আপনাকে দান করেন যিনি আল্লাহর ভালোবাসাপ্রাপ্ত। 

দোয়া অতি শক্তিশালী মাধ্যম। দোয়া বৃথা যায় না। আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই অতি উত্তম বিনিময় দিবেন। হে আমার ভাই, হে আমার বোন, সুন্দর মানুষকে সঙ্গী পাওয়ার স্বপ্ন কখনো ছাড়বেন না। আল্লাহ চাইলে সেই মানুষটাকে আপনার দোয়ার উসিলায় আরো উন্নত আর তাকওয়াবান, পরহেজগার করে দিবেন। দোয়া করুন খুব বেশি করে, নিজের ভবিষ্যত মানুষটার জন্য দোয়া করে অর্জন করে নিন সুন্দর মানুষ। আর নিজেও হয়ে উঠুন তাকওয়াবান। 

যে বান্দা আল্লাহকে খুশি করতে ত্যাগ স্বীকার করে ও সবর করে, আল্লাহ তাকে এমন পুরষ্কার দান করেন যা বান্দার কল্পনার চেয়েও সুন্দর এবং সেই প্রাপ্তিতে সে সন্তুষ্ট হয়ে যায়। 

- সাওফয়ান

ভ্যালেন্টাইন ডে নামের ব্যভিচার ও বেহায়াপনা দিবসে আপনি যা করতে পারেন

ভ্যালেন্টাইন ডে নামের ব্যভিচার ও বেহায়াপনা দিবসে আপনি যা করতে পারেন:

- যেসব জায়াগাতে এইসব নির্লজ্জতা হতে থাকে, সেসব জায়গায় থাকলে আপনি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই নিঃশঙ্কোচে দূরে থাকা প্রথম কাজ। সম্ভব হলে বাইরে বের হবেন না বা ঐসব এলাকায় যাবেন না যেখানে কামের কেনাবেচা হয় বা উন্মুক্তভাবে নির্লজ্জতার প্রদর্শনী হয়।

- টেলিভিশন থেকে দূরে থাকুন। সমস্ত বাণিজ্যিক প্রোডাক্টই এখন মূলত কাম বিক্রি করে পণ্যের আগে। তাই তাদের প্রচারণাও হবে অসুস্থ ও জঘন্য। যতদিন এইসব সংস্কৃতি উলটে দিতে না পারছেন, দূরে থাকাই শ্রেয়।

- নিজেকে এবং পরিবারকে আগুণ থেকে বাঁচানোর নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ। তাই আপনার পরিবার পরিজনকে এইসব নিকৃষ্ট সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করুন।

- প্রচুর দু'আ করুন আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী এবং সন্তান-সন্ততিদের জন্য। বিশেষ করে যারা অবিবাহিত, আল্লাহর কাছে দু'আ করুন যেন আল্লাহ আপনার সঙ্গীটিকে এই নগ্নতা-বেহায়াপনার চারপাশ থেকে দূরে রাখেন।

- সারাক্ষণ আল্লাহকে স্মরণ করুন। আল্লাহর কাছে সাহায্য চান যেন তিনি আপনাকে রক্ষা করেন যাবতীয় অন্যায়-পাপাচার-কামাচারের হাত থেকে। আল্লাহ আপনাকে কেমন করে রক্ষা করবেন তা আপনি একসময় খেয়াল করে অবাক হয়ে যাবেন।

- ব্যাভিচারের ধারে-কাছেও না যেতে আদেশ দিয়েছেন আল্লাহ। গাইর-মাহরাম কারো সাথে আলাপ আপনার অন্তরকে গ্রাস করে ফেলতে পারে। আপনি তখন নামাজেও হয়ত কারো কথা স্মরণ করতে শুরু করতে পারেন। তাই, অন্তরকে কেবল আল্লাহর জন্যই রাখুন। অন্তরকে সুরক্ষিত রাখতে আপনার জন্য গাইর মাহরাম নারী অথবা পুরুষদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

- শয়তান মূলত সুঁই হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হয় অন্তরে, মনে। তাই নিজেকে কোন প্রকার ছাড় দিবেন না শয়তানের ওয়াসওয়াসা কানে ঢুকার জন্য।

- সবশেষে মনে রাখবেন। এইরকম নোংরামির সমাজে যারা নিজেদের চরিত্রকে সুরক্ষিত করে চলবে, আল্লাহ তাদের প্রতি তার রাহমাতের স্রোতধারা বইয়ে দিবেন। হয়ত এটুকু চেষ্টা আপনার হিদায়াতের কারণ হতে পারে। আল্লাহ আপনাকে চরিত্রবান জীবনসঙ্গী দান করবেন এবং আখিরাতেও আপনি সার্বিকভাবে মুক্তি লাভ করবেন। তাই ন্যুনতম চেষ্টাটুকু করে হলেও জাহান্নামের আগুণ থেকে দূরে থাকুন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, পাপাচার, সীমালঙ্ঘন থেকে এবং আমাদেরকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করুন। আল্লাহ আমাদের উত্তম চরিত্র অর্জনের তাওফিক দান করুন যা তিনি ভালোবাসেন।

14 February 2014

বিলম্ব বিয়ের কারণে নষ্ট এই সমাজ?

​সরকারের 'ministry of women & children affairs' এইমাত্র মেসেজ কইরা জানালেন, মেয়েদের ১৮ এবং ছেলেদের ২১ বছর বয়সের আগে বিয়ে করা "Unlawful" এবং harmful তাদের "Physical & Mental Development"...

খুবই ভালো কথা !!

একই দিনে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে পালিত হচ্ছে 'ভ্যালেন্টাইন ডে' বা ব্যভিচার ও পাপাচার দিবস। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগা দিয়েই এই পাপাচার ও নোংরামি দিবস পালিত হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে তো নির্বিকার সকলেই। উপযুক্ত Physical & Mental Development-এর বহির্প্রকাশ ১০ বছর ধরে প্রেম করে আত্মহত্যা, বিয়ের পরে পরকীয়া, ত্রিভুজ-চতুর্ভুজ-পঞ্চভুজ প্রেমের কাহিনীগুলো... এমন নোংরামি-নষ্টামির মতন হাজার হাজার ঘটনার সূত্রপাত হবে আজকেই। জ্বি, নিশ্চিত থাকুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি,২০১৪ তারিখে নিদেনপক্ষে হাজার হাজার অন্যায় ও বেআইনী ঘটনার শুরু হচ্ছে!!

অথচ কোনদিন কেউ বলে নাই ছেলেদের ২১ এবং মেয়েদের ১৮ বছর বয়সের মধ্যেই বিয়ে দিয়ে দেয়া উচিত, আবশ্যক। তাহলে বলা যেত এইটা সুস্থ একটা বিশ্লেষণ এবং আহবান। আল্লাহর সৃষ্টি দুনিয়াতে আল্লাহর সৃষ্টি মানুষকে আল্লাহ এবং তার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেভাবে চলতে বলেছেন তার বিপরীত উপায়ে সব law তৈরি করে তাকে unlawful বললে যেসব development এর বাণী শোনানো হয়, তা নিঃসন্দেহে বাস্তবতাবিবর্জিত, অমানবিক এবং অপ্রীতিকর।

সমাজের মানুষের ভেতরে যেই ভালোবাসার হাহাকার, সম্পর্কের টানাপোড়েন, জিঘাংসা, ঘৃণা, অশান্তি, পাপাচার --সেগুলোর পিছনে পারিবারিক শান্তির প্রবল অভাব অন্যতম প্রধান কারণ। পরিবার সমাজের ক্ষুদ্রতম একক। পরিবারে মানুষের শান্তি নাই, সমাজে কই থেকে আসবে? বিয়ে ছেলেখেলা নয়। আমরা যাদের নিয়ে সমাজে চলি, তারা প্রতিটি পুরুষ ও মহিলাই একেকটি মানুষ। শৃংখলার বাইরে তাদের জীবন তাদের রক্তপিপাসু পশুদের চেয়ে নিকৃষ্ট করে দেয়।

আমরা মনে করি, বিয়ে নিষিদ্ধের বয়স নিয়ে হুড়পাড় না করে যদি বিয়েকে সহজ করা নিয়ে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া হতো, তাহলে এই দেশ ও জাতি অনেক এগিয়ে যেতো। উন্নতি ও সুস্থতা আমরা সবাই-ই তো চাই!!

26 January 2014

ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আপনার বিয়ে হতে দেরি হচ্ছে? ধৈর্যহারা হয়ে পড়ছেন?

অনেক মুসলিমাহ বোন খুব চমৎকার; তারা দ্বীনদার, সত্যিকারের সুন্দর মন নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলেন। সংসারের অনেক টানাপোড়েনেও নিজের প্রতি অত্যাচার না করে ধৈর্যধারণ করেন আর দ্বীনী জ্ঞানে ও কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। অথচ এই সত্যিকারের অসাধারণ মেয়েটির বিয়ে নিয়ে সবখান থেকেই অনেক দুঃখজনক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় চেনাজানা 'আধুনিকা' মেয়ে যারা অনেক ছেলেদের সাথে সম্পর্ক রাখত, ভালো ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যায়। অনেক সময় চোখের সামনেই দ্বীনদার এক ভাইয়ের কাছে এমন মেয়ের বিয়ে হয়ে যেতে দেখেন, যে হয়ত লুকিয়ে প্রেম করতো; একসময় বাবা-মা তার বিয়ের আয়োজন করলেন। এদিকে হয়ত বোনটির বয়স একটু একটু করে বেড়ে চলেছে, মনটাও কেমন যেন রাফ এন টাফ হয়ে যাচ্ছে...

একই ঘটনা অনেক দ্বীনদার ভাইয়ের ক্ষেত্রেও হয়। সবসময় চোখ নামিয়ে পথ চলেছেন। টিভি-মুভি নিয়ে নিজেকে ফিতনা থেকে বাঁচিয়ে চলেছেন। দ্বীনের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। প্রেম করেননি যত ইচ্ছেই হোক, বরং তার অনাগত স্ত্রীর জন্যই নিজের আবেগগুলোকে জমিয়ে রেখেছেন। অথচ পড়া শেষ করে চাকুরি করে বিয়ে করতে হবে তার, পারিবারিক অর্থসংকটের কারণে। অথবা হয়ত একটা চাকরিও জুটিয়েছেন তবু আধুনিকা মেয়ে ছাড়া পর্দানশীন দ্বীনদার মেয়ে পাচ্ছেন না বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করেও। ধৈর্যহারা হয়ে পড়ার অবস্থা...

এমন ভাই ও বোনদের অবস্থা জানতে পেরে আমাদের নিজেদেরই খারাপ লাগে। আমরা জানি উত্তম চরিত্র কতটা কঠিন, কতটা অমূল্য, কতটা দারুণ ব্যাপার। আর সেই জিনিসটা অর্জন করতে একটা মানুষকে কতটা যুদ্ধ করতে হয় নিজের নফসের সাথে। তবে, যেই কষ্ট কেবল আল্লাহর জন্য, তার প্রতিটি মূহুর্তের উপহার আল্লাহ অবশ্যই বহুগুণে বাড়িয়ে দিবেন। তবে আমরা এটাও জানি, মুসলিম সমাজে এইরকম হবার কথা ছিলো না। ১৪৫০ বছর আগে যেই আদর্শ সমাজ গড়ে উঠেছিলো --তাতে বিয়ে ছিলো স্বাভাবিক, যেকোন যিনা ছিলো মৃত্যুসম আতঙ্কের বিষয়। তখন বিয়ের জন্য বসে থেকে বোনদের প্রোডাক্টিভিটি আর মন পচে যাওয়ার অবস্থা হতো না, ভাইয়েরাও দিনরাত কামের প্রচারণার সমাজে যুদ্ধ করতেন না। তারা তাদের গোটা মনোযোগটাই আল্লাহর দ্বীনের কাজে দিতেন। নিজের স্ত্রী কিংবা স্বামী ছাড়া অন্য কোন হারাম সম্পর্কের কথা ভাবতেও যেতেন না।

হ্যাঁ বোন, হ্যাঁ ভাই, আপনার কষ্ট লাগাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভেবে দেখুন, আমরা তো জানি আমাদের সময় ধীরে ধীরে কিয়ামতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা জানি ধীরে ধীরে এই সমাজ আরো অশ্লীলতার দিকেই যাবে, হত্যা-ফিতনা-ফাসাদের দিকে যাবে। আমরা তো এটাও জানি, এইরকম সমাজে আমাদের প্রতিটা ত্যাগ, প্রতিটা চেষ্টার মূল্য আল্লাহর কাছে অনেক হবে বেশি পাওয়া যাবে। ফিতনার সময়ে, কঠিন সময়ে যারা ঈমানকে রক্ষার জন্য কষ্ট করে, তাদের মর্যাদাই অন্যরকম। আমরা এটাও জানি, প্রতিটি মানুষকেই ঈমানের পরীক্ষা দিতে হবে। সেই পরীক্ষা সবার সবকিছুতে হয় না। আপনার হয়ত বিয়ে নিয়েই হচ্ছে।

আপনি তো জানেন, আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদেরকে বিপদে ফেলেন, ফলে তারা আরো বেশি করে আল্লাহর উপরে নির্ভর করে, কান্নাকাটি করে, ঈমানকে আরো উঁচুতে তুলে নেয়। আল্লাহ তাদের এর বিনিময়ে অনেক উচ্চ মর্যাদা দান করতে পারবেন আখিরাতে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আপনার প্রতিটা নিঃশ্বাসের খবর রাখেন হে প্রিয় ভাই, হে প্রিয় বোন। ধৈর্যহারা হবেন না। আল্লাহর জন্য এই জীবন, প্রশান্তচিত্তে ইবাদাত করে চলুন।

এই তো আর মাত্র অল্প ক'টা দিন। এই অবস্থা বদলে যাবে একদিন। আপনি সেদিন নিজের কাছেই ভালো ফিল করেবেন যে কঠিন সময়টাতেও আল্লাহ আপনাকে শক্ত থাকার, তাওয়াক্কুল করার সুযোগ দিয়েছিলেন আলহামদুলিল্লাহ। প্রাপ্তির আশা যার থাকে কেবল আল্লাহর কাছে, তার আর কীসের অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা? যিনি সবর করছেন আল্লাহ তাকে পুরষ্কার দিবেন বলে, তার আবার কীসের না-পাওয়ার শঙ্কা? নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন ভাই ও এমন বোনদের বেহিসাব পুরষ্কার দিবেন; আমরা তো কেবল আল্লাহর কাছেই আশ্রয় চাই, সাহায্য চাই।

7 January 2014

প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে আত্মহত্যার নিউজ চারিদিকে

সবাই শুধু অন্যদের মতন হইতে চায়। টিভিতে অ্যাডে, বিলবোর্ডে, নাটকে, সিনেমায়, মিউজিক ভিডিওতে, বন্ধুদের মধ্যে কত্তো প্রেম। সুতরাং, প্রেম করা তো আবশ্যক হয়ে যায়। আশেপাশে ছেলে/মেয়ে খুঁজে না পেলে জোর করে বের করা লাগে। এরপর কিছুমিছু আজেবাজে, মনখারাপ করা ঘটনা হয়। স্বাভাবিকভাবেই অন্ধ আবেগের ফল যা হয় -- দু'জনের মিলে না, এত কষ্টে পরিবার তাদের বড় করে, তারা মিলতে দেয় না।

অথবা একজনের চেয়ে আরেকজন বদ হয়, অমিল হয়। অন্যজনের জীবনের দাম থাকে না। ধুম করে মরার সিদ্ধান্ত। আরে ভাই, সবার জীবন একরকম তো না। সবাই কেন শুধু অন্যদের মতন হইতে চায়। তুমি কি জানো তোমার জীবনটা অনেক দামী ভাইয়া/আপু?  তুমি চাইলে কী না করতে পারো এই জীবনটা দিয়েই। কেউ নিজেদের প্রাণটা আরো অনেকের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে। অনেকেই অনেক রোগে ভুগেও বেঁচে থাকতে চাইছে -- তারা জীবনটার গুরুত্ব বুঝে।

ভালোবাসা অনেকভাবেই পাওয়া যায়। মা-বাবা, ভাইবোন, বন্ধু, স্যার/ম্যাডাম, পথের একজন ফেরিওয়ালা, দোকানী, ড্রাইভার -- সবার ভালোবাসাই অন্তরকে স্পর্শ করে। আর একটু ধৈর্য ধরলেই তুমি দেখবে একটা জীবনসঙ্গীও কয়েক বছর পর তোমার কাছে অধিকার নিয়ে আসবে, একসাথে পাড়ি দিবে দু'জনে অনেকদূর পথ।  মরে গেলে আর অনন্তকালের ক্ষমার পথ তো রুদ্ধ করে দিবে প্রিয় ভাই/আপু। এই ভুল করিয়ো না যেন।

-- সাফওয়ান
http://thesafwanism.blogspot.com