28 February 2014

যারা প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়ে দুঃখে ভুগছেন তাদের জন্য লেখা

অনেক ভাই এবং বোন ভুলে নানান প্রেমঘটিত বা হৃদয়ঘটিত সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে। তাদের জীবনটা যন্ত্রণায় জর্জরিত হয়ে যায়। যারা বুঝেন তারা ভুল করেছেন, তাদের পিছু ছাড়েনা সেই স্মৃতি কিংবা সেই যন্ত্রণাগুলো। হয়ত তারা নিজেদেরকে খারাপ ভাবতে থাকেন বা মনে করেন যে তারা আর আগের মতন 'পবিত্র' নেই।

কারো কারো মনে হয়, আল্লাহ হয়ত তাকে আর মাফ করবেন না, তিনি হয়ত আর পবিত্র একজন জীবনসঙ্গী পাবেন না। অথচ যারা না বুঝে ভুল করে ফেলে এবং পরে ভুল বুঝতে পেরে তাওবা করে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেন। আল্লাহর ক্ষমাশীলতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা না থাকলে তখনই আমরা এরকম ভুল চিন্তা করতে থাকি...

যারা ভুল করে ফেলে, তাদের উচিত তাওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসা। ভুলগুলোকে ঢেকে ফেলে উত্তম কাজ। তাই আমাদের উচিত ইসলামকে শেখার কাছে নিয়োগ করা নিজেকে, আল্লাহর দ্বীনের পথে সময় ব্যয় করা, নামাজে নিয়মিত হওয়া, কুরআন পড়া। ইসলামের পথে অন্যদেরকে ডাকা। মানুষের উপকার করা উচিত, সাদাকাহ করা উচিত।

আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে চাইতে হয়। পবিত্র জীবনসঙ্গীও দোয়া করে চাইতে হয়। আল্লাহ সমস্তু দোয়া শোনেন। পবিত্রসঙ্গী পাওয়ার সৌভাগ্য যার হয়, তিনিই বুঝেন এটা কতবড় এক প্রাপ্তি, কত বড় এক নিয়ামাত। এই বিশাল পুরষ্কার পেতে হলে আল্লাহর কাছে শেষরাতে নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত, আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করে কান্নাকাটি করা উচিত।

আল্লাহ আমাদের ভাইবোনদেরকে ভুল থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন, ভুল বুঝে ফিরে তাওবা করে দ্বীনে আত্মনিয়োগ করা উচিত। আল্লাহ আমাদের জীবনকে কবুল করুন।

23 February 2014

ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এবং একটি এক্সট্রা

​​বোনেরা 'ওয়েডিং ফটোগ্রাফি' টাইপের পেইজগুলোতে যত কম ঘুরঘুর করবেন, আপনাদের মানসিক ও আত্মিক স্বাস্থ্য ততই ভালো থাকবে। ভাইদের তো ওইসব এলাকায় যাওয়া নিষিদ্ধ, তারপরেও গেলে, বোঝাপড়াটা আল্লাহর সাথেই করবেন :)

হে আমার বোন, নিজেকে প্রদর্শিত করার, লোকজনকে নিজের সৌন্দর্যে মুগ্ধ করাতে যেই আয়োজন তা রীতিমত অন্যায়। আপনার সৌন্দর্য কেবলই আপনার স্বামী জন্যই আয়োজিত হওয়া উচিত।

তাছাড়া, অর্থনৈতিক মন্দা সবখানে। ওয়েডিং ফটোগ্রাফির জন্য যে আয়োজন -- শাড়ি, গহনা, বিউটি-পার্লার, ফটোগ্রাফার এনে আপনার এই আয়োজনটা 'স্মৃতি' ধরে রাখার নামে অর্থের যথেচ্ছা ব্যবহার নয় কি? আপনি বরং অপচয় না করে এই সমাজের হাজার হাজার অভাবী মানুষের কারো জীবনকে সুন্দর করতে সাদাকাহ করে দিন। আল্লাহ আপনার এবং আপনার দাম্পত্য জীবনকে কল্যাণে ভরে দিবেন ইনশা আল্লাহ।

* *

হৃদয়ের ক্যামেরায় অডিও ভিজুয়াল রেকর্ডিং করুন
​​
বিয়েতে আর বিবাহিত জীবনে ডিয়েছেলার ক্যাম্রা (DSLR camera) দিয়ে আপনার আর আপনার বউয়ের রোমান্টিক টাইমগুলো লোকজনকে দেখিয়ে তাদের চোখের ক্ষুধা না মিটিয়ে

নিজের চোখের লেন্স দিয়ে, হৃদয়ের ক্যামেরায় অডিও ভিজুয়াল রেকর্ডিং করুন, বাকিটা জীবনে সুখস্মৃতি থাকুক সময়গুলো -- তাতে কারো ভাগ না থাকুক, আপনার মূহুর্তগুলো কেবলই আপনাদের থাকুক।

আল্লাহর বিধান মানুন, ভুল এড়িয়ে চলুন, পাপ এড়িয়ে চলুন, আফসোস এড়িয়ে চলুন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করুন।

* * * * *
কীরে! এখনো বিয়ে করিস নি কেন? দ্বীনদার মেয়ে খুঁজে পাস নি?
- একটা পেয়েছিলাম।
- বিয়ে করলি না কেন?
- সেও তো একটা দ্বীনদার ছেলে খুঁজছিল!!
এমন কথোপকথন তো আজকাল অনেকেরই জীবনের বাস্তবতা। এরকম যেন না হয়। আল্লাহ আমাদের আত্মার সাথী হিসেবে যাদের নির্ধারণ করে রেখেছেন, তাদের সাথে যেন তাড়াতাড়ি মিলিয়ে দেন।
[ কথোপকথনটি সংগৃহীত]

* *

সত্যিকারের শক্তিশালী পুরুষেরা জানে কীভাবে গাইর মাহরাম নারী থেকে দৃষ্টিকে অবনত করতে হয়।

22 February 2014

বিয়ের আলাপ যখন আগাতে থাকবে তখন ইস্তিখারা করুন

আমাদের উচিত আল্লাহর সাথে নিজেদের সম্পর্ককে গভীর করার চেষ্টা করা। বিয়ে এই ক্ষেত্রে একটা ভালো উপলক্ষ হতে পারে। আপনার বিয়ের আলাপ যখন আগাতে থাকবে, কিংবা আপনি যখন নিয়াত করছেন বিয়ের জন্য, আপনি নফল ইবাদাতের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।

আল্লাহর কাছেই সাহায্য চান, মানুষের কাছে না চেয়ে। আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টির মালিক, তার হাতেই সমস্ত সম্পদ। তিনি যদি আপনার জন্য কল্যাণ চান, তবে কেউ ঠেকাতে পারবে না। তিনি যদি না চান, তবে কেউ দিতে পারবে না। তাই আপনার সমস্ত চাওয়া হোক আল্লাহর কাছে।

নফল ইবাদাতের আগে তো ফরজ। যদি এমন হয়ে থাকে যে আপনার ফরজ ইবাদাতগুলোতে আপনি নিয়মিত নন, তবে শীঘ্রই নিয়মিত হোন। আল্লাহর কাছে বান্দা যেকোন সময়েই চাইতে পারে। তবে যারা তার আদেশকে মেনে চলে, তারা তার নিকটবর্তী। তাই নামাজে নিয়মিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বিয়ের সময়টা হোক আপনার অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি আমলে পূর্ণ, বেশি ঈমানে পূর্ণ। আর এই বেশি বেশি জিনিসগুলো যেন মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কেবল বৃদ্ধিই পায়। ঈমানে এবং আমলে আপনি আল্লাহর আরো নৈকট্য লাভ করুন। 


* * * * *
[২]

​ইস্তিখারা, বিয়ে হোক বা অন্য সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই হোক, আল্লাহর কাছে চাওয়ার একটা অদ্ভুত ডাইমেনশান আছে। আপনি একটা বিষয় নিয়ে হয়ত চিন্তা করছেন কোন দিকে আগাবেন, কী করবেন --সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার উপায় বুঝতে পারছেন না। এমন অবস্থাতে পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই পড়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে। কিন্তু মুসলমদের বিষয়টা আলাদা। সে আল্লাহর কাছে রাতের বেলা তাহাজ্জুদে কাঁদে আর বলতে থাকে আল্লাহ এই বিষয়ে যদি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার কল্যাণ থাকতে তাহলে আমার জন্য একে সহজ করে দেন। আর যদি আপনি এতে আমার কল্যাণ মনে না করেন তাহলে একে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দেন...

বিষয়টা এমন না যে যা নিয়ে/যাকে নিয়ে আলাপ হচ্ছে সে/তা কম আকর্ষণীয় বা কম ভালো। বরং, আপনি দু'আ করবেন এতে আপনার জন্য কল্যাণময়তার জন্য। আর আল্লাহর কাছে এই দু'আ আপনি করবেন নামাজ পড়ে...  মনে রাখবেন, আপনাকে ক্রমাগত আল্লাহর কাছে ইস্তিখারার নামাজ আদায় করে দোয়া করতে থাকা উচিত। যদি আল্লাহ সব 'খাপে-খাপ' মিলিয়ে সহজ করে দিতে থাকেন, আপনার পছন্দ-অপছন্দ, সংশয় ছাপিয়ে কাজটা যেদিকে সহজ হয়, সেদিকেই পাল মেলে দেয়ার একটা ব্যাপার...  এভাবে হয়ত আপনি যা পাবেন, তাতেই আল্লাহ আপনার জন্য কল্যাণ রেখেছেন। আল্লাহ গায়েবের খবর জানেন, আমরা কিছুই জানিনা, আমরা কিছুই বুঝিনা।

অনেক সময় অনেক অনাকর্ষণীয় বস্তুর মোড়কে অনেক ভালো জিনিস থাকে, অনেক সময় তার বিপরীতটাও হয়। আল্লাহর উপরে নির্ভর যারা করে, তারা ইনশা আল্লাহ সহজ পথটর সন্ধান পাবে। এইটুকু হলো বান্দার উপলব্ধি...

স্কলারদের আলাপ পড়তে এই লিঙ্ক দেখুন :
http://learningdeen.wordpress.com/2012/07/22/istikhara/

আপনার কি মনে হয় না আপনার সঙ্গীটি এই মূহুর্তে কেমন আছেন?

​​আপনার কি মনে হয় না আপনার সঙ্গীটি এই মূহুর্তে কেমন আছেন? আল্লাহ আপনাকে এখনো হয়ত তার সাথে মিলিয়ে দেন নি। কিন্তু হয়ত এই শহরেই, অথবা এই দেশেই, অথবা এই পৃথিবীরই অন্য কোন প্রান্তে সে আপনারই মতন সময় পার করছে। হয়ত তার মনের আবেগ, স্বপ্ন-ভালোবাসার অনেক অনুভূতি সে আপনার জন্যই আপনার মত করেই জমা করে রাখছে... যেদিন আপনার সাথে নতুন সংসার শুরু হবে, সেদিন থেকে ধীরে ধীরে এই ভালোবাসার অনুভূতিগুলো আপনার জন্য ঢেলে দিবে... 

আপনি যেমন এই নোংরামির সংস্কৃতির নখরের আঁচড়ে আহত, তিনিও হয়ত। আপনার মত করে তার হৃদস্পন্দনেও আল্লাহর কথা স্মরণ করে, আপনার মতন করে তিনিও চাইছেন যেন আল্লাহ আপনাকে তার সাথে শীঘ্রই মিলিয়ে দেন। 

নিজেকে অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে দূরে রাখুন। অনাগত সেই মানুষটার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় আপনি অপেক্ষা করতে থাকুন। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীকে আল্লাহ হেফাজত করেন, তার চরিত্রকে হেফাজত করেন। আল্লাহ যেন এমন কারো সাথেই আপনাকে মিলিয়ে দেন, যাকে তিনি ভালোবাসেন এবং যে আল্লাহকে ভালোবাসে। আল্লাহ যেন এমন মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার এবং জীবনসঙ্গী হবার তাওফিক আপনাকে দান করেন যিনি আল্লাহর ভালোবাসাপ্রাপ্ত। 

দোয়া অতি শক্তিশালী মাধ্যম। দোয়া বৃথা যায় না। আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই অতি উত্তম বিনিময় দিবেন। হে আমার ভাই, হে আমার বোন, সুন্দর মানুষকে সঙ্গী পাওয়ার স্বপ্ন কখনো ছাড়বেন না। আল্লাহ চাইলে সেই মানুষটাকে আপনার দোয়ার উসিলায় আরো উন্নত আর তাকওয়াবান, পরহেজগার করে দিবেন। দোয়া করুন খুব বেশি করে, নিজের ভবিষ্যত মানুষটার জন্য দোয়া করে অর্জন করে নিন সুন্দর মানুষ। আর নিজেও হয়ে উঠুন তাকওয়াবান। 

যে বান্দা আল্লাহকে খুশি করতে ত্যাগ স্বীকার করে ও সবর করে, আল্লাহ তাকে এমন পুরষ্কার দান করেন যা বান্দার কল্পনার চেয়েও সুন্দর এবং সেই প্রাপ্তিতে সে সন্তুষ্ট হয়ে যায়। 

- সাওফয়ান

ভ্যালেন্টাইন ডে নামের ব্যভিচার ও বেহায়াপনা দিবসে আপনি যা করতে পারেন

ভ্যালেন্টাইন ডে নামের ব্যভিচার ও বেহায়াপনা দিবসে আপনি যা করতে পারেন:

- যেসব জায়াগাতে এইসব নির্লজ্জতা হতে থাকে, সেসব জায়গায় থাকলে আপনি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই নিঃশঙ্কোচে দূরে থাকা প্রথম কাজ। সম্ভব হলে বাইরে বের হবেন না বা ঐসব এলাকায় যাবেন না যেখানে কামের কেনাবেচা হয় বা উন্মুক্তভাবে নির্লজ্জতার প্রদর্শনী হয়।

- টেলিভিশন থেকে দূরে থাকুন। সমস্ত বাণিজ্যিক প্রোডাক্টই এখন মূলত কাম বিক্রি করে পণ্যের আগে। তাই তাদের প্রচারণাও হবে অসুস্থ ও জঘন্য। যতদিন এইসব সংস্কৃতি উলটে দিতে না পারছেন, দূরে থাকাই শ্রেয়।

- নিজেকে এবং পরিবারকে আগুণ থেকে বাঁচানোর নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ। তাই আপনার পরিবার পরিজনকে এইসব নিকৃষ্ট সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করুন।

- প্রচুর দু'আ করুন আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী এবং সন্তান-সন্ততিদের জন্য। বিশেষ করে যারা অবিবাহিত, আল্লাহর কাছে দু'আ করুন যেন আল্লাহ আপনার সঙ্গীটিকে এই নগ্নতা-বেহায়াপনার চারপাশ থেকে দূরে রাখেন।

- সারাক্ষণ আল্লাহকে স্মরণ করুন। আল্লাহর কাছে সাহায্য চান যেন তিনি আপনাকে রক্ষা করেন যাবতীয় অন্যায়-পাপাচার-কামাচারের হাত থেকে। আল্লাহ আপনাকে কেমন করে রক্ষা করবেন তা আপনি একসময় খেয়াল করে অবাক হয়ে যাবেন।

- ব্যাভিচারের ধারে-কাছেও না যেতে আদেশ দিয়েছেন আল্লাহ। গাইর-মাহরাম কারো সাথে আলাপ আপনার অন্তরকে গ্রাস করে ফেলতে পারে। আপনি তখন নামাজেও হয়ত কারো কথা স্মরণ করতে শুরু করতে পারেন। তাই, অন্তরকে কেবল আল্লাহর জন্যই রাখুন। অন্তরকে সুরক্ষিত রাখতে আপনার জন্য গাইর মাহরাম নারী অথবা পুরুষদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

- শয়তান মূলত সুঁই হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বের হয় অন্তরে, মনে। তাই নিজেকে কোন প্রকার ছাড় দিবেন না শয়তানের ওয়াসওয়াসা কানে ঢুকার জন্য।

- সবশেষে মনে রাখবেন। এইরকম নোংরামির সমাজে যারা নিজেদের চরিত্রকে সুরক্ষিত করে চলবে, আল্লাহ তাদের প্রতি তার রাহমাতের স্রোতধারা বইয়ে দিবেন। হয়ত এটুকু চেষ্টা আপনার হিদায়াতের কারণ হতে পারে। আল্লাহ আপনাকে চরিত্রবান জীবনসঙ্গী দান করবেন এবং আখিরাতেও আপনি সার্বিকভাবে মুক্তি লাভ করবেন। তাই ন্যুনতম চেষ্টাটুকু করে হলেও জাহান্নামের আগুণ থেকে দূরে থাকুন।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন নির্লজ্জতা, বেহায়াপনা, পাপাচার, সীমালঙ্ঘন থেকে এবং আমাদেরকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করুন। আল্লাহ আমাদের উত্তম চরিত্র অর্জনের তাওফিক দান করুন যা তিনি ভালোবাসেন।

14 February 2014

বিলম্ব বিয়ের কারণে নষ্ট এই সমাজ?

​সরকারের 'ministry of women & children affairs' এইমাত্র মেসেজ কইরা জানালেন, মেয়েদের ১৮ এবং ছেলেদের ২১ বছর বয়সের আগে বিয়ে করা "Unlawful" এবং harmful তাদের "Physical & Mental Development"...

খুবই ভালো কথা !!

একই দিনে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে পালিত হচ্ছে 'ভ্যালেন্টাইন ডে' বা ব্যভিচার ও পাপাচার দিবস। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগা দিয়েই এই পাপাচার ও নোংরামি দিবস পালিত হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে তো নির্বিকার সকলেই। উপযুক্ত Physical & Mental Development-এর বহির্প্রকাশ ১০ বছর ধরে প্রেম করে আত্মহত্যা, বিয়ের পরে পরকীয়া, ত্রিভুজ-চতুর্ভুজ-পঞ্চভুজ প্রেমের কাহিনীগুলো... এমন নোংরামি-নষ্টামির মতন হাজার হাজার ঘটনার সূত্রপাত হবে আজকেই। জ্বি, নিশ্চিত থাকুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি,২০১৪ তারিখে নিদেনপক্ষে হাজার হাজার অন্যায় ও বেআইনী ঘটনার শুরু হচ্ছে!!

অথচ কোনদিন কেউ বলে নাই ছেলেদের ২১ এবং মেয়েদের ১৮ বছর বয়সের মধ্যেই বিয়ে দিয়ে দেয়া উচিত, আবশ্যক। তাহলে বলা যেত এইটা সুস্থ একটা বিশ্লেষণ এবং আহবান। আল্লাহর সৃষ্টি দুনিয়াতে আল্লাহর সৃষ্টি মানুষকে আল্লাহ এবং তার রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেভাবে চলতে বলেছেন তার বিপরীত উপায়ে সব law তৈরি করে তাকে unlawful বললে যেসব development এর বাণী শোনানো হয়, তা নিঃসন্দেহে বাস্তবতাবিবর্জিত, অমানবিক এবং অপ্রীতিকর।

সমাজের মানুষের ভেতরে যেই ভালোবাসার হাহাকার, সম্পর্কের টানাপোড়েন, জিঘাংসা, ঘৃণা, অশান্তি, পাপাচার --সেগুলোর পিছনে পারিবারিক শান্তির প্রবল অভাব অন্যতম প্রধান কারণ। পরিবার সমাজের ক্ষুদ্রতম একক। পরিবারে মানুষের শান্তি নাই, সমাজে কই থেকে আসবে? বিয়ে ছেলেখেলা নয়। আমরা যাদের নিয়ে সমাজে চলি, তারা প্রতিটি পুরুষ ও মহিলাই একেকটি মানুষ। শৃংখলার বাইরে তাদের জীবন তাদের রক্তপিপাসু পশুদের চেয়ে নিকৃষ্ট করে দেয়।

আমরা মনে করি, বিয়ে নিষিদ্ধের বয়স নিয়ে হুড়পাড় না করে যদি বিয়েকে সহজ করা নিয়ে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া হতো, তাহলে এই দেশ ও জাতি অনেক এগিয়ে যেতো। উন্নতি ও সুস্থতা আমরা সবাই-ই তো চাই!!