27 May 2014

বিয়ে মানে কি কুরবানি? বিবাহিত মানে কি মৃত?

​​
​​বিয়ে মানে কুরবানি, বিবাহিত মানে মৃত --> এরকম কিছু কথা সমাজে প্রচলিত। নতুন প্রজন্মের মাঝে খুব বেশি ফান বা মজা-মশকরা হিসেবে এইসব ব্যবহৃত হয়। আপনি কি ভেবে দেখেছেন আপনি যেই ফান করেন তা কি সঠিক নাকি বেঠিক? আপনার জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হচ্ছে কিনা তা যখন চিন্তা করবেন, এটাই আপনার ঈমানের পরিচয়।

বিবাহিত মানে কি আসলেই মৃত? অথচ আল্লাহ বলেছেন তিনি আমাদের জন্য আমাদের জীবনসঙ্গীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা প্রশান্তি, উচ্ছ্বাস আর দয়া অনুভব করি। আমাদের প্রিয় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেছেন বিয়ে হলো দ্বীনের অর্ধেক। আল্লাহ বলেছেন আমাদেরকে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য নির্লজ্জতার আশেপাশেও না যেতে। আমাদের প্রতি আদেশ রয়েছে আমাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে। এমতাবস্থায় আপনার শারীরিক আর মানসিক প্রয়োজনগুলো যদি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য না করে আপনি সামলাতে পারেন, তাহলে বিয়ে না-ই করলেন। সেক্ষেত্রই হয়ত বিয়েকে 'মৃত্যু' হিসেবে ফান করে প্রাণ শীতল করতে পারেন। তবে এরকম হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিয়ে তো কেবল তারাই এড়িয়ে যেতে চায় যারা অক্ষম অথবা চরিত্রহীন। তারাই বিয়ে নিয়ে বাজে কথা তারাই বলে যারা নিজেরা মূর্খ, হতাশ। যারা আল্লাহর উপরে ভরসা করে তার কাছে দোয়া করতে চায় না, পারেনা।

সাবধান!! আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশ যে পবিত্র বন্ধনকে ঘিরে রয়েছে, তা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরাকে "নির্দোষ ফান" হিসেবে ধরে নেয়ার ধৃষ্টতা দেখাবেন না। আপনার "নির্দোষ ফান" কিন্তু আরো অনেকের মনে ডিরেক্টলি বা ইনডিরেক্টলি প্রভাব বিস্তার করে, হতাশ করে। বিয়ে বা পরিবারের মতন অতি-গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আপনার "ফানি" মন্তব্যগুলো নোংরা উপহাস হয়ে যায় কিনা সেটা খেয়াল করুন।

বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। বিয়ের ফলে একজন মানুষ দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ করতে পারে, বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে সে আল্লাহকে ভয় করে। বিয়ে শেখায় দায়িত্ববোধ। বিয়ের ফলে চরিত্র রক্ষার ঢাল আপনি পেতে পারেন। আপনার ব্যক্তিগত চরিত্র ও স্বভাবগুলোতে খুব কাছ থেকে আরেকটা মানুষ বেশ খেয়াল রাখতে পারেন তাই বিয়ে আপনার জন্য একটা রিফ্রেশার ও রিমাইন্ডারও বটে। বিয়ে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠান। বিয়ে নিয়ে তাই নোংরা বাজে ফান করার অপসংস্কৃতিকে না বলুন। আল্লাহকে ভালোবেসে তার ভালোবাসাকে আপন করে নিন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দিন।

1 May 2014

নববিবাহিতদেরকে অভ্যর্থনা জানানো

​​নববিবাহিতদেরকে অভ্যর্থনা জানানো একটা সংস্কৃতি, একটা সৌন্দর্যময় বিষয়। কিন্তু এখনকার খ্যাত সংস্কৃতিতে এইটা হয়ে গেছে এমন -- কংগ্র্যাচুলেশন, কংগ্র্যাটস, নাইস, খুল। আল্লাহ মাফ করুন। অথচ আমাদের সুন্নাহ পদ্ধতিতে নববিবাহিতদের জন্য আশীর্বাদ/অভ্যর্থনা/উইশ হিসেবে যেটা করা হয় সেটা হলো সুন্দর একটা দোয়া --

- "বারাকাল্লাহু লাকা ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া জামা'আ বাইনাকুমা ফি খাইর।"
- "আল্লাহ আপনার জন্য বরকত দান করুন, আপনার উপর বরকত নাযিল করুন এবং কল্যাণের সাথে আপনাদের উভয়কে একত্রিত করুন।"

[তিরমিযি/১০৯১, ইবনে মাযাহ ১৯০৫। দোয়াটি পাবেন, হিসনুল মুসলিম: দোয়া নং-৭৮]

এখন থেকে আমরা নববিবাহিতদেরকে এই সুন্নাহ পদ্ধতিতে কল্যাণ কামনা/উইশ/আশীর্বাদ করবো ইনশা আল্লাহ!

আপনি যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন

​​​​আপনি যতবার অন্যায়ভাবে ​​​​আপনি প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন, হোক সে ট্যারা চোখে গাইর-মাহরাম নারীর দিকে তাকানো অথবা টেলিভিশনের পর্দায় তাকিয়ে থেকে স্বল্পবসনা চরিত্রহীন নারীদের দেহের বিভঙ্গ দেখা, অথবা চুরি করে কিছু খাওয়া, কিছু অন্যায়ভাবে মেরে দেয়া, বাসে উঠে টাকা না দিয়ে বাস থেকে নেমে পড়া, আপনি আপনার শারীরিক চাহিদাকে হারাম উপায়ে পূরণ করবেন, কিংবা যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির চাওয়া পূরণ করবেন -- আপনি আপনাকেই ধ্বংস করছেন।

প্রতিটি কামনা ও বাসনার প্রতি সাড়া আপনাকে নামিয়ে দিবে নিচে। যেভাবে নক্ষত্র খসে পড়ে আকাশ থেকে, আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মনুষ্যত্বের পতন। আপনার নামাজে মনোযোগ কমে যাবে, আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারবেন না, হৃদয় পাপে শক্ত হয়ে যেতে থাকবে আপনি নিজের ভবিষ্যতকে এভাবেই ধ্বংস করতে থাকবেন।

বাঁচতে হলে অনুতপ্ত হয়ে আর কখনো করবেন না এমন নিয়াত করে তাওবা করতে হবে। যদি ফিরে পেতে চান হৃদয়ের শান্তি, যদি অনুভব করতে চান প্রিয়জনদের ভালোবাসা -- আপনাকে নিজের পশুত্বকে কুরবানি করে ফিরে আসতে হবে। মনে রাখবেন, পাপাসক্ত অন্তর কখনো পবিত্র ভালোবাসার সৌন্দর্যকে অনুভব করতে পারে না।

সাবধান হোন। দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ চাইলে হারাম থেকে দূরে থাকুন। নিশ্চয়ই শয়তান চাইবে আপনাকে প্রতিনিয়ত পথভ্রষ্ট করতে। আল্লাহ আমাদেরকে অন্যায়, অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দিন।