12 March 2017

জীবনে ভালো থাকার জন্য যা করতে হবে

জীবন কতনা অদ্ভূত! কখনও কতইনা সুন্দর আর আনন্দময়, আর কখনও কত কষ্টকর! আমাদের জীবনটাই যে এমন! কেউ তো জানিনা আমার যতি চিহ্ন কোথায়… কী নিয়ে দুঃখ করবো আমি? আজ হয়ত আমি অনেক সুখী, যদি আজই চলে যেতে হয় এই জগত ছেড়ে, তবে আমি কি প্রস্তুত যাওয়ার জন্য? আমি যতটুকু সুখে আছি, অনেকেই তো তার চাইতে খারাপ আছেন, তাইনা?জীবনটাই তো এমন! অনেক পাওয়া আর না পাওয়া দিয়ে ঘেরা… অনেক তৃপ্তি আর অতৃপ্তি মাখানো… তাকে তো আপন করে নিলে চলেনা! তাকে সাথে করে চলতে হতে হয়। এলোমেলো হয়ে গেলেও প্রস্তুত হতে হবে আখিরাতের জন্য… সেটাতে ভুলে গেলে চলবেই না!


একটা কথা শুনেছিলাম : জীবনে যা ঘটেছে, তা ভালো হয়েছে। যা হচ্ছে, তা-ও ভালো হচ্ছে। আর ভবিষ্যতে যা ঘটবে, তা-ও ভালোই হবে


ছেলেবেলায় শোনা সেই গল্পের কথা মনে পড়ে গেলোঃ
এক লোক মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখেন তার জুতো জোড়া হারিয়ে গেছে। ভীষণ মন খারাপ করে তিনি পথ চলতে শুরু করলেন খালি পায়ে। কিছুদূর যাবার পর তিনি দেখলেন একজন ভিক্ষুককে যার দু’টো পা-ই নেই… তখন তার নিজের জুতো হারাবার দুঃখ ঘুচে গেলো… আমার তো অন্ততঃ দু’টো পা অক্ষত আছে! যাক না দু’জোড়া জুতো…
এটা মনে হয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর একটা কবিতায় পড়েছিলাম আমরা।
যা হারিয়ে গেছে আমার, তার চাইতে অনেক বেশি কিছু আমার কাছেই আছে। অনেকের কাছে সেটুকুও তো নেই! এটাই হয়ত আত্মিক শান্তি অর্জনের ভাবনা হওয়া উচিত। আর সেই শান্তির খোজেই তো আমরা ছুটে চলেছি জগতময়! যদি মনেই শান্তি পাওয়া যায়, তবে আর ক্ষতি কী?
আজ কিছু টিপস, কীভাবে ভালো থাকা যায় :
  • নিজেকে কখনও অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।
  • নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা থেকে বিরত থাকুন। সবকিছুকে পজেটিভ ভাবে গ্রহন করতে চেষ্টা করুন।
  • নিজেকে নিয়ে এবং কাছের মানুষদেরকে নিয়ে অনর্থক বেশি দুঃচিন্তা করবেন না। মনে রাখবেন, দুঃশ্চিন্তা কখনোই সমস্যার সমাধান করবেনা।
  • নিছক আড্ডা দিয়ে সময়ের অপচয় করবেন না।
  • শত্রুতা এবং অন্যের প্রতি ঘৃণা বজায় রাখবেন না। এতে কেবল দুঃশ্চিন্তা বাড়ে এবং মানসিক শান্তি নষ্ট হয়, যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • নিজের এবং অন্যের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিন, শিক্ষাকে মনে রাখুন, ভুলকে ভুলে যান। অতীতের ভুল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাটাঘাটি করে তিক্ততা বাড়িয়ে বর্তমানের সুন্দর সময়কে নষ্ট করবেন না।
  • মনে রাখবেন, জীবন একটি বিদ্যালয় যেখানে আপনি শিখতে এসেছেন। জীবনের যত সমস্যা তা এই বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত, এ নিয়ে তাই চিন্তা না করে বীজগণিতের মত সমাধানের চেষ্টা করুন।
  • প্রচুর পরিমাণে হাসুন এবং সবসময় হাসিখুশী থাকার অভ্যাস করুন। সেই সাথে অন্যদেরকেও হাসিখুশী রাখতে চেষ্টা করুন।
  • জীবনের সব ক্ষেত্রে জয় লাভ করা অসম্ভব। তাই হার মেনে নিতে প্রস্তুত থাকুন। এটাও আপনার একটা মানসিক বিজয়।
  • অন্যের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন।
  • অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কি ভাববে তা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। নিজের কাজ করে যান আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
  • সময়ের কাজ সময়ে করুন, কিছুতেই এখনকার কাজ পরে করার জন্যে ফেলে রাখবেন না।
  • যেসব জিনিস চিত্তাকর্ষক ও আকর্ষণীয়, কিন্তু ও উপকারী নয়, তা থেকে দূরে থাকুন।
  • সুসময় বা দুঃসময় যাই হোক না কেন, সবই বদলাবে, এটাই চিরন্তন নিয়ম, তাই কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত উৎফুল্ল বা অতিরিক্ত দুঃখিত হবেন না।
অনেক তো শুনলাম… এবার শুধু একটা কথা বলতে চাই… মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ
“তোমরা ধৈর্য্য ও সালাতের সাহায্যে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা বাকারা: ১৫৩)
এই স্বল্প সময়ের পৃথিবীতে যেন আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে বিদায় নিতে পারি সেই প্রার্থনা আমার সবার জন্য রইলো। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন, সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। সঠিক পথ তো সে-ই পায়, যে তার জন্য স্বপ্ন দেখে, চেষ্টা করে, হৃদয় যার লালায়িত থাকে মুক্তির প্রত্যাশায়…

4 September 2016

এক কাপ চা আর কিছু নির্মল আনন্দ

একটু সকাল সকাল অফিসপাড়ায় চলে এলাম। ফুটপাথের একটা চা দোকানে দাঁড়ালাম।বিক্রেতা পত্রিকা পড়ছেন -- 'মানবজমিন'। চা-ওয়ালার বেচাকিনি খুবই চলে, ৮টাকা কাপ চা বিক্রি করেন। তার ফুট দশেক দূরেই চায়ের দোকানটা বন্ধ, উপায় নেই বলে বিনীতস্বরে পত্রিকা-পাঠকের কাছেই এক কাপ চা চাইলাম।

এমন সময় এক শুভ্র দাড়ির এক লোকের আবির্ভাব, প্রথমেই কথা -- 

"ঐ চা দেও চা দেও, তুমি আবার কী পেপার পড়ো। চা দেও।" 

আপত্তিকর বাক্য সন্দেহ নেই। যাই হোক, তাকে যা পরিবেশন করা হলো, চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বয়াম থেকে বিস্কুট বের করে নিলো -- 

"এই বিস্কুট তো তিন দিনের পুরান। এইটা তো তিন দিন আগের।" 

সকালের নিরবতায় মনোযোগ এই লোকের কথার দিকেই যাচ্ছিলো। আমি মনের আনন্দে শেষ চুমুকটা দিয়ে টাকা শোধ করছি সেই সময় লোকটার অভিযোগ -- 

"চায়ে দেখি সাবানের গন্ধ। ওই, চায়ে তো সাবানের গন্ধ লাগে।"

এইবার আর থাকতে পারলাম না। হেসে ফেললাম। মুখে কয়েকমিনিট হাসি ছিলো, অনেকে আমার হাসি দেখে তাকিয়েও ছিলো। না হেসে কী করবো, কত বিচিত্র মানুষ এই শহরে, এক কাপ চা খেতেই কত অভিযোগ। 

6 August 2016

একজন কিংবদন্তীর কথা বলছি


রবীন্দ্র উত্তর আধুনিক কালের কবিদের মধ্যে যিনি শব্দচয়নে, জীবনবোধে, শব্দালংকারের নান্দনিকতায়, বর্ণনায় অসামান্য আর ধ্রুপদী, তিনি কবি আল মাহমুদ। বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের দলে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে এই কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। 'সোনালী কাবিন' কাব্যগ্রন্থটি একটি মাস্টারপিস হিসেবেই সমাদৃত হয়েছে, এমনকি কবির একচোখা সমালোচক ও নিন্দুকদের মাঝেও। এই কাব্যগ্রন্থটি অনুবাদ হয়েছে অনেকগুলো ভাষায়। কবি আল মাহমুদের হাতে জন্ম নিয়েছে 'মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো', 'বখতিয়ারের ঘোড়া'র মতন অসামান্য কিছু কাব্যগ্রন্থ। শিশুদের জন্য তার কাব্যগুলোও নান্দনিক আর সর্বজন সমাদৃত।

21 March 2016

একজন কবির জীবন

কবিদের মনে হয় নিজ জীবন বলে কিছু থাকেনা।
কবিদের অনেকগুলো চোখ থাকে -- দৃশ্যমান, আত্মিক, শাব্দিক।
কবিদের তাই ঘুম হয়না সবার মতন।
একজন কবি, আয়েশ করে দিন কাটিয়ে দিতে পারেন না।

আল মাহমুদ বলেছিলেন, কবিতা হলো ম্লান মায়ের মুখ, হাঁটুজল পানি
রুদ্র বলেছিলেন তার ভালোবাসার সময় নেই, বন্দী চোখ পাহারা দেয় খল সামাজিক নখ।
শহীদ কাদরী তেমনি চেয়েছিলেন সময়ের কাছে দু'টি অর্থ, অর্থাভাবে ক্লিষ্ট।

কবিরা তাই সম্পদশালী হন না। কবিদের চোখে থাকে চারপাশ জীবন।
সমাজের খল চোখকে পাহারা দেন একজন কবি।
কবিদের তাই প্রিয়ার সাথে বনে-বাদাড়ে ঘোরা হয়না।

সুনীলের কবিতায় তাই তিনি বলেছিলেন, যদি নির্বাসন দাও আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোয়াব।
হেলাল হাফিজ বলেছিলেন, নিউট্রন বোমা চেন মানুষ চেন না?
কবিরা বোধকে নিয়ে ভাবেন, কবিদের চেতনায় সমাজ গেঁথে থাকে।

কবিরা সবাইকে বোঝেন, কবিদের কেউ বোঝেনা। কবিরা নিঃসঙ্গ, একা।
কবিরা শব্দ বুনে চলেন সমাজকে গেঁথে দিয়ে কালের কাছে ধরে দিতে।
অথচ কবিরা হারিয়ে যান এই কালের গভীরে।
বিদায়কালে কবিরা খুব ভুগতে থাকেন, যন্ত্রণায়।
সব জেনে বুঝেও তিনি হাল ছাড়েন না, সমাজকে এঁকে চলেন শব্দে।

২৪ জানুয়ারী ২০১৩, সকাল ১০:০৮ 

11 March 2016

যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়

পথ চলতে গিয়ে চোখে অনেক কিছু ভেসে ওঠে আমাদের - সবাই একভাবে দেখে না। দেখার দৃষ্টি বদলায় চিন্তার ক্ষমতার কারণে। তার লেখাটা গভীর চিন্তার প্রতিচ্ছবি। কিছু কথা জমলো যা লেখা দরকার... যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যভিচার সস্তা হয়ে যায়... একটি উচ্ছ্বল তরুণী যখন অনেক সাজুগুজু করে একটা ছেলের হাত ধরে রাস্তায় উড়ে উড়ে চলে -- তখন তাকে দেখলে কে কী মনে করেন জানিনা, আমার মনে হত অন্যকিছু। এই মেয়েটা অনেক প্রস্তুতি নিয়েই রাস্তায় বের হয়েছে, সাজুগুজু মেয়েরা অনেক সময় নিয়ে চিন্তা করে। কালার ম্যাচিং, ফিটিং এটা ওটা। এরপর রাতের বেলা একটা ছেলের হাত ধরে পার্কে হাঁটা। হয়ত বাবা-মা তখন ভাবছেন -- মেয়েটা ঢাকায় পড়াশোনা করছে। অন্তত তারা অনেক বড়ো কিছু স্বপ্ন নিয়েই তাদের পাঠান শহরে। ঢাকার মধ্যবিত্ত মেয়েরা রাত ঘরে পথে ঘুরেনা সচরাচর। পরিবারগুলো একদমই বিকিয়ে যায়নি।

8 March 2016

জীবনসঙ্গী খুঁজছেন কিন্তু পাচ্ছেন না? তাহলে আপনার জন্যেই এই লেখা

​​​চারপাশে সবাই বিভিন্ন দিবসের নামে সেজেগুজে বেড়াচ্ছে... প্রচুর ছেলে দেখা যায়, প্রচুর মেয়ে দেখা যায়। কিন্তু আপনার জীবনসঙ্গী হবার মতন কোন মানুষকে আপনি মনে মনে হলেও কোথাও খুঁজে পান না, তাইনা? হয়ত ভাবছেন, কোথায় পাবেন আপনার মানুষটাকে, কে খুঁজে দেবে আপনার উপযুক্ত জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী?

9 November 2015

বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে নারীর প্রতি অন্যায় আচরণ কি কাল্পনিক কথাবার্তা? ভিন্নচোখে দেখা কিছু মুক্ত আলোচনা

নারী নিয়ে যত কথা হয় সমাজে, পত্রিকায়, টক-শো, সেমিনারে যত লোকের, যতটা সময়ে -- তার ক্বচিৎ-কদাচিত যদি পরিবর্তনের প্রতি সত্যিকারের কাজ করত তাহলে সত্যিই অনেককিছু বদলে যেত বলে আমার ধারণা। বিষয়টা স্পর্শকাতর, সত্যিকারের সমস্যার। মুসলিম সমাজের নারীর অবস্থান নিয়ে সম্ভবত পাশ্চাত্য বা বাংলাদেশি ইসলামবিদ্বেষী সেক্যুলাররা বা অমুসলিমরা যত কথা বলেছে -- খুব কমই এই সমাজের ভিতরের মানুষ থেকে এসেছে।

28 August 2015

ভালোবাসার মোড়কে কামতাড়নার এই শহর

আজকাল বাজারে ভালোবাসার ব্যাপক সংকট মনে হয়, নাকি পণ্য হিসেবে এর কাটতি বেশি কে জানে। ফেসবুকে ঢুকেই দেখি একটা স্পন্সর করা অ্যাড একটা পেইজের -- ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই। নিম্নমানের গ্রাফিকসের একটা ছবি, তাতে LOVE লেখা। পেইজে ইংরেজি বাংলা নামকরণ এবং বন্ধনির ব্যবহারে ভুল দেখেও জ্ঞানের দৈন্যতা বোঝা যায় সুষ্পষ্ট। এই নিম্নরুচির বিজ্ঞাপণওয়ালাদের কথা বাদ দিলেও দীর্ঘদিন যাবত 'উচ্চমানের রুচিওয়ালাদের' টাকা দিয়ে চালানো AIRTEL কর্তৃক বিজ্ঞাপন 'আপনি কি মনে করে বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল? তাহলে চলে আসুন আমাদের সাথে' টাইপের বিশ্রি বিজ্ঞাপণেও ভালোবাসা/বন্ধুত্ব সংকট প্রকৃষ্ট।

8 April 2015

বিয়ের আগে যেসব বই পড়া উচিত

​​​অনেকবার শুনেছি 'স্বামী-স্ত্রী অন্তরঙ্গতা' কী সেই বিষয়ে কৌতুহল মেটানোর নাম করে অনেক বেয়াদব, নির্লজ্জ, পাপাচারী লোক বাজারের অশ্লীল ও বেহায়াপনার উপকরণ কামসূত্র, যৌনদ্দীপক গল্প/উপন্যাস, নোংরা চটি বই/ওয়েবসাইট, পর্নোগ্রাফি মুভি ক্লিপস দেখার বিষয়কে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। চিন্তা করে দেখুন, পুরো বিষয়টাই 'স্বাভাবিক' হিসেবে ধরা কোন সুস্থ লোকের পক্ষে সম্ভবই না। যেসব লোক এইসব নির্লজ্জতা, ব্যভিচার, অশ্লীলতা ও বেহায়াপনাকে সমাজে সহজ করতে কাজ করেছেন/করছেন আল্লাহ তাদেরকে ভুল বুঝে ফিরে আসার তাওফিক দিন। নয়ত আল্লাহ তাদেরকে স্তব্ধ করে দিন যেন এই সমাজকে আর বেশি কলুষিত করতে না পারে।

8 February 2015

আপনাদের প্রশ্ন, আমাদের উত্তর @ আমি একজন কে খুব ভালবাসি

​​::: প্রশ্ন :::
আমি একজন কে খুব ভালবাসি ...।। আমি জানি এটা হারাম...।। সেজন্য আমি সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলত্ব চাসসি ।। কিন্তু সে বলছে সে আমাকে ছাড়া বাঁচবে না ......... আমি সবে মাত্র অনার্সে ভর্তি হইসি ...এখন কি করব ??? ...।

2 December 2014

ভোগবাদীদের অনুষ্ঠানে মঞ্চে শিল্পীর মৃত্যু হলেও নাচাগানা থেমে থাকে না

​​ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান সাহেব দার্শনিক লোক হিসেবে পরিচিত, সুশীলও বটে। চোখের সামনে সহবক্তা কাইয়ুম চৌধুরী মরে গেলেও তিনি অনুষ্ঠান থামাতে আগ্রহী ছিলেন না, দার্শনিকতা কপচে বলে উঠলেন, "অনুষ্ঠান চলবে, জীবন যেমন বয়ে চলে"। [সূত্র: কালের কন্ঠ, ১/১২/১৪] তার একটু আগেই কাইয়ুম চৌধুরী স্টেজে উঠে বলেছিলেন, "আমার একটি কথা বলার রয়েছে।" কিন্তু মৃত্যুর ফেরেশতা তাকে সে সুযোগ দেননি। মৃত্যুর নির্দেশ আল্লাহ এভাবেই দেন। ঠিক যে সময়ে, যে মূহুর্তে ঠিক করা রয়েছে তার একচুল এদিক ওদিক হয়না। শিল্পী কাইয়ুম এখন আখিরতের পথে হাঁটা দিতে বাধ্য হয়েছেন। যা কথা বলার তার অতীত নিয়েই বলতে হবে এখন আল্লাহর কাছে।

29 October 2014

'ট্রু লাভের' ছড়াছড়ি আর কিছু মুসলিম ছেলেমেয়ের কথা

যেসব ভাইবোনেরা চারপাশের উত্তাল বন্যার স্রোতের মতন 'ট্রু লাভ' দেখে, সস্তার চাইতে সস্তা ভালোবাসা আর কামের প্রচারণা দেখেও নিজেদের সংযত রাখতে রাখতে ক্লান্ত হয়ে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন, তাদের জন্য বলছি -- হে আমার ভাই/বোন, আপনি তো আল্লাহর জন্যই নিজেকে সংযত রাখছেন তাইনা? আপনি তো জানেন, আমাদের যেকোন সময় যে মৃত্যু আলিঙ্গন করতে পারে, এবং তার পরেই আল্লাহর কাছে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসের খবর রাখেন, তিনি আমাদের জীবনের কষ্টগুলোর, পরীক্ষাগুলোর বিপরীতে তার জন্য আঁকড়ে ধরে থাকা ভালোবাসাকে পছন্দ করেন।

আপনি যদি আপনার অনাগত মানুষটির জন্য পবিত্র থাকতে চেষ্টা করতে থাকেন, যত কষ্টই হোক, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। আল্লাহর পুরষ্কার তো আমাদের কল্পনারও অতীত, তাইনা? আপনি যদি জীবনসঙ্গীর সাথে মিলিত হবার আগেই দুনিয়া থেকে চলে যান, জান্নাতে আল্লাহ আপনাকে উত্তম ও পবিত্র সঙ্গী দান করবেন। আল্লাহর জন্য কষ্ট করা আপনার প্রতিটি মূহুর্ত, প্রতিটি ক্ষণ আপনার জন্য অকল্পনীয় পুরষ্কারের ব্যবস্থা করে দিবে। আল্লাহ প্রিয় বান্দাদেরকে কিন্তু একটু বেশি করে পরীক্ষা করেন, তাদের হাতগুলো যখন দু'আর জন্য উঠে থাকে আর চোখের পানি ঝরতে থাকে -- সেই মূহুর্ত আর অন্তরকে আল্লাহ পছন্দ করেন।

প্রচুর দু'আ করুন। আল্লাহর কাছে দু'আ করুন তিনি যেন আপনার জন্য যাকে নির্ধারিত রেখেছেন সে-ও যেন পবিত্র থাকে। সমাজের, সংস্কৃতির নখরের জঘন্যতা যেন তাকে স্পর্শ না করতে পারে। আল্লাহর ভান্ডার অফুরন্ত, আল্লাহ নিশ্চয়ই সমস্ত দু'আ শোনেন। প্রতি ওয়াক্ত নামাজে আপনি আপনার অনাগত মানুষটির জন্য দু'আ করতে থাকুন। কে জানে, হয়ত যিনি আপনার জন্য নির্ধারিত আছেন, তিনি আপনার দু'আর বদৌলতেই বদলে যাবেন, আরো উন্নত হবেন, ছুটবেন জান্নাতের পথে, ইসলামকে আঁকড়ে ধরবেন আপনার চাইতে বেশি করে।

দু'আ হচ্ছে বান্দার এমন এক মাধ্যম যা ভাগ্য বদলে দেয়, যা আমাদেরকে আল্লাহর খুব কাছে নিয়ে যায়। ভাই ও বোন আমার, দু'আ করুন, প্রচুর দু'আ করুন। ইনশা আল্লাহ খুব শীঘ্রই আল্লাহ আমাদেরকে পুরষ্কৃত করবেন। আল্লাহ অভাবহীন, দয়াময়, প্রেমময় ও অসীম দয়ালু।

~ একজন মুসলিম ভাই

17 October 2014

পর্নোগ্রাফি ও সংসার

​​একটা খুব প্রয়োজনীয় কথা, একটা সিরিয়াস সতর্কবাণী। অবিবাহিত মুসলিম ভাই-বোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অনেকের ধারণা -- "বিয়ের আগের কিছু খারাপ স্বভাব আছে, বিয়ে হলে হয়ত কেটে যাবে, ব্যাপার না।" -- ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভুল।

পাশ্চাত্যের দেখাদেখি পর্ণোগ্রাফি আমাদের সমাজেও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ফেসবুকেও অজস্র পর্ণগ্রাফিক ফটোর ছড়াছড়ি। ছেলে এবং মেয়ে কেউ বাদ যায় না এসব ছবি দেখার হাত থেকে। অনেক ছেলেরাই পর্ণগ্রাফি মুভি এবং গল্পসমূহের নেশার শিকার। মনে রাখবেন, পর্ণগ্রাফি কোন অভ্যাস নয় শুধু, এটা একটা নেশা -- নিউরোসায়েন্টিস্টরা বিষয়টাকে ভয়াবহ নেশা হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছেন। একসময় অভ্যাস হয়ে তা মনের ভিতরে প্রোথিত হয়ে যায়।  অজস্র সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে কেননা বিয়ের পরে স্ত্রী আবিষ্কার করেন তার স্বামী তাকে আসলে পর্নোগ্রাফি নায়িকার মতন করে চাচ্ছে। ক্রমাগত পর্ন মুভি দেখতে দেখতে অনেকেই মানসিকভাবে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বিয়ের পরেও ছাড়তে পারে না।

15 October 2014

ফেসবুক কোন ম্যাচমেকিং মিডিয়া নয়

​​​​বিয়ে করতে উতলা হয়ে বিছানা কাটাকাটিতে বসে যাওয়া, আম্মাকে ফোন করে শীতের দিনে সবার বিয়ে হওয়ার আলাপ করতে বসে যাওয়ার গল্পগুলা কেবল রম্যতেই মানায়। বাস্তবে এসব কাপুরূষতা। বিয়ে করতে সাহস লাগে। পুরুষ হিসেবে আপনার বিয়ে করার আগ্রহটা কোন ফান না। রাতের বেলা একলা লাগে, শীতের দিনে একলা লাগে বলে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার।

9 September 2014

বাবা-মায়ের সাথে সন্তানেরা মনের কথা শেয়ার করতে পারে না

একটা অদ্ভুত প্রথা চলছে এ সমাজে। ঘরের মানুষদের কাছে ভালো ব্যবহার পাওয়া দুষ্কর হয়, রাগারাগি, ঝগড়াঝাটি, কথা কাটাকাটি চলে নিয়মিত। বাবা-মায়ের সাথে সন্তানেরা মনের কথা শেয়ার করতে পারে না সম্পর্কের জটিলতার কারণে, অথচ সেই সন্তানটিই বাইরে কোন বন্ধু বা বড় ভাইয়ের হাতে তার জীবনের স্পর্শকাতর 'শেয়ারিং' করে ভবিষ্যতকে জটিলতর করে ফেলে। মা-কে মেয়ের আন্তরিক গলায় কথা বলা হয় না কিন্তু বান্ধবীর সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা মিষ্টি কথোপকথন হয়। ঘরে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্য হয়, সেটা তারা সমাধানও করে না। কিন্তু তারা যখন কর্মস্থলে যায় তাদের পুরুষ-মহিলা কলিগদের সাথে মিষ্টি কথায়, মিষ্টি ভাষায় আলাপচারিতা শুনে ঘরকে অপছন্দ হতে থাকে। কর্মক্ষেত্রের সংস্কৃতি যদি মিষ্টি ভাষা ও সুন্দর ভাষা হয়, ঘরের মাঝে আদববিহীন আচরণ, নোংরা ভাষা ও অহংবোধের এইসব প্রদর্শনী আমাদের পরিবারগুলোকেই ধ্বংস করছে। কোন স্ত্রী স্বামীর প্রতি কঠোর ও তিক্ত ভাষা ব্যবহার করতে থাকে কোন চিন্তা মাথায় নিয়ে সেটা খুবই অবাক করা বিষয়। আমাদের সমাজের সংসারগুলোর এই ক্ষয় ও দুর্গতি নিয়ে সবারই চিন্তা করা উচিত। নিজেদের প্র্যাকটিসিং বলে বলে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলা মানুষদের পরিবারেও অজস্র সমস্যা এখন। অথচ আল্লাহর কাছে সেই ব্যক্তি প্রিয় যার আচরণ সুন্দর, শুধু চরিত্রই যথেষ্ট নয়। অন্যদের সাথে কেমন করে ব্যবহার করা হয় সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

27 August 2014

ছেলেরা সম্মান পেতে চায়, মেয়েরা চায় ভালোবাসা

শাইখ ওয়ালিউল্লাহ একটা আলোচনাতে বলেন, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের খারাপ ট্রেডিশানগুলোই মূলত অনুকরণ করেছি, ভালোগুলো খুব কমই করি। এখনকার সমাজে তাই খারাপের প্রচলন অনেক বেশি হয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ বলছিলেন, একসময় দাদী-নানীরা সম্মান করে তাদের হাজব্যান্ডদের নাম ধরে ডাকতেন না কখনো। যদিও এই ধরণের কোন বিষয় ইসলাম আদেশ করে না তবু এরকম সম্মানের ব্যাপারগুলো এখন সমাজ থেকে প্রায় উঠেই গেছে। এখনকার অনেক অনার্স/মাস্টার্স পাশ স্ত্রী তাদের স্বামীদের গায়ে হাত তোলেন এমন ঘটনাও সমাজে বেশ ছড়িয়ে গেছে। চল্লিশা, তিরিশা টাইপের কিছু শোক পালনের মতন বানোয়াট এবং ভুল ট্রেডিশান এখনো সমাজের আনাচে কানাচে চলছেই... কিন্তু আমাদের দাদাদের মুখের উপরে কথা বলা দূরে থাক, তাদের চেয়ারে পর্যন্ত বসার কাজটি করতেন না আমাদের আব্বা-চাচারা। যদিও ইসলাম এমনটি করতে বলে না, তবু আমরা তো সম্মান করার বিষয়গুলো না নিয়ে কেবল ভুল ও নিষিদ্ধ কাজগুলোকেই জারী রাখছি পরবর্তী সময়ে... 

সম্মান করা ভালোবাসা পাওয়ার একটি মাধ্যম। বেশিরভাগ মানুষই বলেন, ছেলেরা সম্মান পেতে চায়, মেয়েরা চায় ভালোবাসা। সংসারের ছোট-বড় কাজে স্বামীদের সম্মান না দিয়ে বরং লাঞ্ছিত-অপমানিত করার মাঝে নারীর ভালোবাসা অর্জনের কোন সম্ভাবনা নেই, তেমনি স্ত্রীকে ভালোবাসা না দিলেও সম্মান পাওয়া যায় না। এই বুঝগুলো আমাদের সমাজ থেকে যেন হারিয়েই যাচ্ছে। ভালোবাসা এবং সম্মান কোন দাবী-দাওয়ার মতন বিষয় নয়, কিন্তু এটা কাজ দিয়ে অর্জন করে নিতে হয়।

প্রিয়জনদেরকে তাদের প্রাপ্য সম্মান ও ভালোবাসা বুঝিয়ে দিন এবং নিজেকে প্রস্তুত করুন আগামীর সুন্দর জীবনের জন্য।

24 August 2014

পর্নোগ্রাফি নেশায় আক্রান্তদের মুক্তির জন্য কিছু সহজ টিপস

সমাজের অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনাকাংখিত সেক্সুয়াল রিলেশনশিপ বা যিনার সাথে জড়িয়ে পড়েন। আল্লাহর রাহমাতে তারা হয়ত ভুল বুঝতে পারেন। কিন্তু পুরোনো খারাপ কাজ আর পিছু ছাড়ে না, স্মৃতিতে আসতে থাকে, আবারো সেই পাপে পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ভুল মানুষ করতেই পারে, সেটাই মানবিক। কিন্তু ভুলের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা শয়তানের কাজ। তাই ভুল স্বীকার করে জীবনকে সুন্দর করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।

নুমান আলী খান একটি ভিডিওতে পাওয়া কিছু টিপসের সাথে আরো কিছু জিনিস যোগ করে দিলাম। আশা করি উপকার হবে। আল্লাহ মুসলিম সমাজের সবাইকে হেফাজত করুন।

-- ​ ​সবার আগে সেই খারাপ কাজ ছেড়ে সরে আসতে হবে।

-- ​ ​আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হতে হবে [তাওবা​ ও ইস্তিগফার​ করা]

-- ​ ​ক্রমাগত ভালো কাজ করতে হবে, কেননা ভালো কাজ মন্দ কাজকে ঢেকে দেয়।​​

-- ​ ​সঙ্গীসাথী বদলে ফেলতে হবে।​ আগেকার সম্পূর্ণ ফ্রেন্ড সার্কেলকে এভয়েড করতে হবে।​

-- ​ ​একাকীত্ব থেকে দূরে থাকতে হবে, প্রয়োজনে ভালো সঙ্গীর কারণে গিয়ে ভালো বিষয়ে আলোচনা করতে দূরে কোথাও যাওয়াও উচিত হবে।

-- ​ ​কমিউনিকেশন ডিভাইস থেকে দুরত্ব রাখতে হবে, বিশেষ করে একাকীত্বের সময়ে যেন আবার কোন নতুন সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার স​​ম্ভাবনা না থাকে।

-- আল্লাহর স্মরণ করতে হবে সবসময়।​

-- নামাজে নিয়মিত হতে হবে, ইসলামি জ্ঞানার্জনে নিজেকে লাগিয়ে দিতে হবে।

-- নিজেকে স্মরণ করাতে হবে, দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। আখিরাতে আল্লাহ এই জীবনের সবকিছুর হিসেব নিবেন। ​

-- বিবাহপূর্ব বা বিবাহবহির্ভূত সকল সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন।

-- মোবাইল ফোন, ফেসবুক, মেসেঞ্জারেও যেকোন কমিউনিকেশন থেকে দূরে থাকুন। নইলে শয়তানের ওয়াসওয়াসায় জীবন আবার জটিল হয়ে যাবে।

অনুপ্রেরণা -

১) নুমান আলি খান - সেক্সুয়াল ডিজায়ারস http://www.youtube.com/watch?v=rJY7SoREkOk

২) টাইম টু কিক পর্ন আউট অফ দি সিস্টেম http://muslimmatters.org/2011/08/15/ramadan-time-to-kick-porn-addiction-out-of-your-system/

//২৪ আগস্ট, ২০১৩

27 May 2014

বিয়ে মানে কি কুরবানি? বিবাহিত মানে কি মৃত?

​​
​​বিয়ে মানে কুরবানি, বিবাহিত মানে মৃত --> এরকম কিছু কথা সমাজে প্রচলিত। নতুন প্রজন্মের মাঝে খুব বেশি ফান বা মজা-মশকরা হিসেবে এইসব ব্যবহৃত হয়। আপনি কি ভেবে দেখেছেন আপনি যেই ফান করেন তা কি সঠিক নাকি বেঠিক? আপনার জীবনের প্রতিটি কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হচ্ছে কিনা তা যখন চিন্তা করবেন, এটাই আপনার ঈমানের পরিচয়।

বিবাহিত মানে কি আসলেই মৃত? অথচ আল্লাহ বলেছেন তিনি আমাদের জন্য আমাদের জীবনসঙ্গীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যেন আমরা প্রশান্তি, উচ্ছ্বাস আর দয়া অনুভব করি। আমাদের প্রিয় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেছেন বিয়ে হলো দ্বীনের অর্ধেক। আল্লাহ বলেছেন আমাদেরকে প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য নির্লজ্জতার আশেপাশেও না যেতে। আমাদের প্রতি আদেশ রয়েছে আমাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে। এমতাবস্থায় আপনার শারীরিক আর মানসিক প্রয়োজনগুলো যদি আল্লাহর নির্দেশ অমান্য না করে আপনি সামলাতে পারেন, তাহলে বিয়ে না-ই করলেন। সেক্ষেত্রই হয়ত বিয়েকে 'মৃত্যু' হিসেবে ফান করে প্রাণ শীতল করতে পারেন। তবে এরকম হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিয়ে তো কেবল তারাই এড়িয়ে যেতে চায় যারা অক্ষম অথবা চরিত্রহীন। তারাই বিয়ে নিয়ে বাজে কথা তারাই বলে যারা নিজেরা মূর্খ, হতাশ। যারা আল্লাহর উপরে ভরসা করে তার কাছে দোয়া করতে চায় না, পারেনা।

সাবধান!! আল্লাহ ও তার রাসূলের নির্দেশ যে পবিত্র বন্ধনকে ঘিরে রয়েছে, তা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরাকে "নির্দোষ ফান" হিসেবে ধরে নেয়ার ধৃষ্টতা দেখাবেন না। আপনার "নির্দোষ ফান" কিন্তু আরো অনেকের মনে ডিরেক্টলি বা ইনডিরেক্টলি প্রভাব বিস্তার করে, হতাশ করে। বিয়ে বা পরিবারের মতন অতি-গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আপনার "ফানি" মন্তব্যগুলো নোংরা উপহাস হয়ে যায় কিনা সেটা খেয়াল করুন।

বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। বিয়ের ফলে একজন মানুষ দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ করতে পারে, বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে সে আল্লাহকে ভয় করে। বিয়ে শেখায় দায়িত্ববোধ। বিয়ের ফলে চরিত্র রক্ষার ঢাল আপনি পেতে পারেন। আপনার ব্যক্তিগত চরিত্র ও স্বভাবগুলোতে খুব কাছ থেকে আরেকটা মানুষ বেশ খেয়াল রাখতে পারেন তাই বিয়ে আপনার জন্য একটা রিফ্রেশার ও রিমাইন্ডারও বটে। বিয়ে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠান। বিয়ে নিয়ে তাই নোংরা বাজে ফান করার অপসংস্কৃতিকে না বলুন। আল্লাহকে ভালোবেসে তার ভালোবাসাকে আপন করে নিন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দিন।

1 May 2014

নববিবাহিতদেরকে অভ্যর্থনা জানানো

​​নববিবাহিতদেরকে অভ্যর্থনা জানানো একটা সংস্কৃতি, একটা সৌন্দর্যময় বিষয়। কিন্তু এখনকার খ্যাত সংস্কৃতিতে এইটা হয়ে গেছে এমন -- কংগ্র্যাচুলেশন, কংগ্র্যাটস, নাইস, খুল। আল্লাহ মাফ করুন। অথচ আমাদের সুন্নাহ পদ্ধতিতে নববিবাহিতদের জন্য আশীর্বাদ/অভ্যর্থনা/উইশ হিসেবে যেটা করা হয় সেটা হলো সুন্দর একটা দোয়া --

- "বারাকাল্লাহু লাকা ওয়া বারাকা আলাইকা ওয়া জামা'আ বাইনাকুমা ফি খাইর।"
- "আল্লাহ আপনার জন্য বরকত দান করুন, আপনার উপর বরকত নাযিল করুন এবং কল্যাণের সাথে আপনাদের উভয়কে একত্রিত করুন।"

[তিরমিযি/১০৯১, ইবনে মাযাহ ১৯০৫। দোয়াটি পাবেন, হিসনুল মুসলিম: দোয়া নং-৭৮]

এখন থেকে আমরা নববিবাহিতদেরকে এই সুন্নাহ পদ্ধতিতে কল্যাণ কামনা/উইশ/আশীর্বাদ করবো ইনশা আল্লাহ!

আপনি যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন

​​​​আপনি যতবার অন্যায়ভাবে ​​​​আপনি প্রবৃত্তির খায়েশ মেটাবেন, হোক সে ট্যারা চোখে গাইর-মাহরাম নারীর দিকে তাকানো অথবা টেলিভিশনের পর্দায় তাকিয়ে থেকে স্বল্পবসনা চরিত্রহীন নারীদের দেহের বিভঙ্গ দেখা, অথবা চুরি করে কিছু খাওয়া, কিছু অন্যায়ভাবে মেরে দেয়া, বাসে উঠে টাকা না দিয়ে বাস থেকে নেমে পড়া, আপনি আপনার শারীরিক চাহিদাকে হারাম উপায়ে পূরণ করবেন, কিংবা যতবার অন্যায়ভাবে প্রবৃত্তির চাওয়া পূরণ করবেন -- আপনি আপনাকেই ধ্বংস করছেন।

প্রতিটি কামনা ও বাসনার প্রতি সাড়া আপনাকে নামিয়ে দিবে নিচে। যেভাবে নক্ষত্র খসে পড়ে আকাশ থেকে, আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মনুষ্যত্বের পতন। আপনার নামাজে মনোযোগ কমে যাবে, আল্লাহর কাছে কাঁদতে পারবেন না, হৃদয় পাপে শক্ত হয়ে যেতে থাকবে আপনি নিজের ভবিষ্যতকে এভাবেই ধ্বংস করতে থাকবেন।

বাঁচতে হলে অনুতপ্ত হয়ে আর কখনো করবেন না এমন নিয়াত করে তাওবা করতে হবে। যদি ফিরে পেতে চান হৃদয়ের শান্তি, যদি অনুভব করতে চান প্রিয়জনদের ভালোবাসা -- আপনাকে নিজের পশুত্বকে কুরবানি করে ফিরে আসতে হবে। মনে রাখবেন, পাপাসক্ত অন্তর কখনো পবিত্র ভালোবাসার সৌন্দর্যকে অনুভব করতে পারে না।

সাবধান হোন। দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ চাইলে হারাম থেকে দূরে থাকুন। নিশ্চয়ই শয়তান চাইবে আপনাকে প্রতিনিয়ত পথভ্রষ্ট করতে। আল্লাহ আমাদেরকে অন্যায়, অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দিন।